অর্থ পাচার রোধে আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে উপ-কমিটি

বিদেশে অর্থ পাচার রোধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করাসহ বীমা খাতের অনিয়ম খুঁজতে তিন সদস্যের একটি উপ-কমিটি গঠন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Dec 2014, 05:20 PM
Updated : 10 Dec 2014, 05:20 PM

এই উপ-কমিটির সভাপতি সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য টিপু মুন্সি এবং দুই সদস্য মো. শওকত চৌধুরী ও ফরহাদ হোসেন।

বুধবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত ছাড়াও ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমাতে আবারও দ্রুত জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের নানা সীমাবদ্ধতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রচুর অর্থ দেশ থেকে পাচার হয়ে গেলেও কার‌্যকর প্রতিরোধ গড়ে তোলা যাচ্ছে না। অতীতে অর্থ বিদেশে পাচার হলেও কাউকেই ধরা সম্ভব হয়নি।

“এসব অর্থ জঙ্গি কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এসব বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণে করণীয় নির্ধারণে উপ-কমিটি কাজ করবে।”

অর্থ পাচার ঠেকাতে গৃহীত পদক্ষেপের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় জানায়, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরসহ বেশ কয়েকটি দেশের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ফলে অর্থ পাচারকারীদের শনাক্ত করার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।

বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা যায়, কমিটির তৃতীয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত ছিল, মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন প্রতিরোধে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, কানাডা এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে বিত্তবানদের ‘সেকেন্ড হোমের’ মালিক হওয়া, অর্থ পাচার, ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনতে হবে।

এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপ-সচিব রিজওয়ানুল হুদা স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে বলা হয়,  ইতিমধ্যে ২৭টি দেশের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।

এছাড়া বাহরাইন, ব্রুনেই দারুস সালাম, কাতার, পাপুয়া নিউগিনি ও রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এর ফলে মানিলন্ডারিংয়ে জড়িত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে শনাক্ত করার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এর আগে কমিটির একাধিক বৈঠকে ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমানোর বিষয়ে সুপারিশ করা হয়েছিল। বুধবারের বৈঠকে ব্যাংক ঋণের সুদ নিয়ে কথা হয়েছে।

“বৈঠকে সুদের হার কিছুটা কমেছে বলে সংশ্লিষ্টরা দাবি করলেও কমিটি মনে করে কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।

“ব্যাংকের অলস টাকার কারণেই সুদের হার কিছুটা কম বলে কমিটি মনে করছে।”

বীমা দাবী নিস্পত্তির ক্ষেত্রে জনগণের হয়রানির বিষয়টি তুলে ধরে রাজ্জাক বলেন, “আধুনিক অর্থনীতিতে বীমা বাংলাদেশের জন্য একটি উদীয়মান খাত। তবে এক্ষেত্রে আরো শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে।”

এদিকে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সষ্টির জন্য বিদ্যমান উচ্চ ব্যাংক সুদের হার কমিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার সুপারিশ করেছে কমিটি।

আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরো অংশ নেন কমিটির সদস্য নাজমুল হাসান, টিপু মুন্সি, ফরহাদ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, মো. শওকত চৌধুরী এবং আখতার জাহান।