বিশ্ব বাজারের প্রভাবে কমছে মূল্যস্ফীতি

বিশ্ব বাজারে খাদ্য পণ্যের দামের নিম্নগতিতে ভর করে দেশে টানা ছয় মাস ধরে কমছে মূল্যস্ফীতি।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Dec 2014, 06:24 PM
Updated : 9 Dec 2014, 06:24 PM

সর্বশেষ নভেম্বর মাসে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসভিত্তিক) মূল্যস্ফীতির হার কমে ৬ দশমিক ২১ শতাংশে নেমে এসেছে।

অর্থ্যাৎ গত বছরের নভেম্বর মাসে যে পণ্য বা সেবা কিনতে ১০০ টাকা খরচ হত; এখন সেই একই পণ্য বা সেবার জন্য ১০৬ টাকা ২১ পয়সা খরচ হচ্ছে।

অক্টোবর মাসের মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৬ শতাংশ ধরে এই খরচ ছিল ১০৬ টাকা ৬০ পয়সা।

ছয় মাস আগে জুন মাসে এই হার ছিল ৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

মঙ্গলবার পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সংবাদ সম্মেলনে মূল্যস্ফীতির এ হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেন।

ফাইল ছবি

তিনি বলেন, “বিশ্ব বাজারে খাদ্য পণ্যের দাম কমায় আমাদের এখানেও তার প্রভাব পড়েছে। আর সে কারণেই মূল্যস্ফীতি কমছে।”

‘আগামী মাসগুলোতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “বাজেটে গড় মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশের নীচে নামিয়ে আনার যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে সেটা সম্ভব হবে বলেই মনে হচ্ছে।”

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত পাঁচ মাসের ধারাবাহিকতায় চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরের পঞ্চম মাস নভেম্বরেও পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমেছে।

২০১৩-১৪ অর্থবছরের শেষ মাস জুনে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইতে তা কমে ৭ দশমিক ০৪ শতাংশে নেমে আসে।

অগাস্টে তা কমে ৬ দশমিক ৯১ শতাংশে নেমে আসে। সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ।

তবে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমলেও নভেম্বরে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে।

পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে অক্টোবর মাসে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৫  দশমিক ৭৪ শতাংশ। নভেম্বরে তা সামান্য বেড়ে ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ হয়েছে।

নভেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ। অক্টোবরে হয়েছিল ৭ দশমিক ১৬ শতাংশ।

২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে গড় মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশের নীচে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

এবিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী মূল্যস্ফীতি কমছে। অর্থবছর শেষে গড় মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের কাছাকাছি নেমে আসবে।”

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত এক বছরে (২০১৩ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের নভেম্বর) গড় মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ১০ শতাংশ। পূর্ববর্তী একই সময়ে এ হার ছিল ৭ দশমিক ৫২ শতাংশ।

বিবিএসের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, নভেম্বর মাসে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে শহরের পাশাপাশি গ্রামেও সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমেছে।

অক্টোবরে শহরে মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৬ দশমিক ৭৯ শতাংশ। নভেম্বরে হয়েছে ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ।

নভেম্বরে গ্রামে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ০৫ শতাংশ, যা অক্টোবরে ছিল ৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা সচিব ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (জিইডি) শামসুল আলম, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সুরাইয়া বেগম, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য আরাস্তু খান এবং বিবিএস মহাপরিচালক গোলাম মুস্তফা কামাল।

২০০৫-০৬ বছরকে ভিত্তিবছর ধরে মূল্যস্ফীতির এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।