সরকারি চাকরেদের নতুন করে বেতন-ভাতা বাড়ানোর প্রক্রিয়ার মধ্যেই এ মন্তব্য করলেন মন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার সিলেটে একটি নির্মাণকাজ পরিদর্শন শেষে দুর্নীতি নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) প্রকাশিত প্রতিবেদন সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমার ধারণা ছিল সরকারি অফিসে বেতন কম তাই দুর্নীতি হয়।
“সরকারের গত মেয়াদে ৬২ শতাংশ বেতন বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু তারপরও দুর্নীতি প্রশমণ হয়েছে বলা যাবে না। এটা খুবই দুঃখজনক। এটা অনেকটা চরিত্রের ব্যাপার।”
বুধবার টিআই প্রকাশিত ‘দুর্নীতির ধারণাসূচক ২০১৪’ (সিপিআই) এর তথ্যানুযায়ী এ বছর তালিকায় বাংলাদেশের অবনমন হয়েছে, অর্থাৎ দুর্নীতি বেড়েছে।
বিশ্বের ১৭৫টি দেশ ও অঞ্চলের পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ঊর্ধ্বক্রম অনুযায়ী (ভাল থেকে খারাপ) বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৫ নম্বরে।
১০০ ভিত্তিতে এই সূচকে বাংলাদেশের স্কোর এবার ২৫। এই স্কেলে শূন্য স্কোরকে দুর্নীতির ব্যাপকতার ধারণায় সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত এবং ১০০ স্কোরকে সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত বা সর্বোচ্চ সুশাসনের দেশ হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে।
২০১৩ সালে এই সূচকে ১৭৭টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ ছিল ১৩৬ তম অবস্থানে।
উল্টো দিক থেকে বিবেচনা করলে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান এবার ১৪তম। এই হিসাবে গতবছর বাংলাদেশ ১৬তম অবস্থানে ছিল।
তবে বাংলাদেশে দুর্নীতি বাড়ার দাবি নাকচ করে দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। আর বিএনপির দাবি, ‘জনপ্রতিনিধিত্বশীল’ সরকার না থাকায় দুর্নীতির মাত্রা বেড়েছে।
সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণকাজ পরিদর্শনকালে অর্থমন্ত্রী টিআইয়ের প্রতিবেদন নিয়ে সরাসরি মন্তব্য না করলেও এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের দুর্নীতির পরিমাপ করাটা কঠিন বলে মন্তব্য করেন।
“সম্প্রতি প্রকাশিত টিআইর দুর্নীতি বিষয়ক রিপোর্ট নিয়ে আমার কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। তবে দুর্নীতিতে আমরা উপরে উঠছি না নিচে নামছি সেটা বিচার করা খুব সহজ নয়।”
মন্ত্রী আরো বলেন, “দেশের মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল হলে দুর্নীতি কমে। আমার মনে হয় দুর্নীতি আরো কমাতে অর্থনৈতিক অবস্থার আরো উন্নতি করা দরকার।”
সেন্ট্রাল ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, “সিপিডি একটি থিংক ট্যাংক, তারা তাদের অ্যাসেসমেন্ট প্রকাশ করে। সেটা আমাদের মনঃপুত হয় না।”
ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের পর অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে মুহিত বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ভাগ্য হল, সেখানে এখন রাজনৈতিক দল ঢুকে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কীভাবে রাজনৈতিক দলকে বিদায় করা যায় সেটা দেখতে হবে।”
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ান, সাধারণ সম্পাদক শফিুকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবিব, ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ এসময় মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।