বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন হারের তফাৎ কমানোর দাবি

প্রবাসীদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারে ক্রয়-বিক্রয়ে পার্থক্য কমানোর দাবি জানিয়েছেন প্রবাসীরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2014, 04:03 PM
Updated : 23 Nov 2014, 04:03 PM

রোববার সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠানো প্রবাসীদের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তাদের পক্ষে এই দাবি জানান সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান।

বিকালে রাজধানীর পূর্বানী হোটেলে বৈধ চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠানো উৎসাহিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০১৩ দেয়।

সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানোর জন্য ২০ প্রবাসী এবং সরকারি বন্ডে সর্বোচ্চ বিনিয়োগের জন্য চার জনকে অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে অন্যতম পুরস্কারপ্রাপ্ত মাহতাবুর বলেন, “আমরা প্রবাসীরা বিদেশ থেকে পরিশ্রম করে আয় করি। আমাদের অর্থ দেশে ব্যয় হয়। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্ফীত হচ্ছে।

“বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রা কেনা-বেচার মধ্যে পার্থক্য অনেক। আমাদের দাবি এই পার্থক্য কমানো হোক।”

বিনিময়ের জন্য প্রয়োজনে একটা সার্ভিস চার্জ বা কমিশন রাখার প্রস্তাব করে তিনি বলেন, তাতে প্রবাসিরা লাভবান হবে। ব্যাংকিং চ্যানেলেও রেমিটেন্স বাড়বে, হুন্ডি কমবে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও বাড়বে।

প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিনিয়োগের জন্য দেশে আলাদা একটা ইপিজেড করারও দাবি জানান মাহতাবুর রহমান।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নাজনীন সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী।

বৈধ চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠানোর আহ্বান জানিয়ে এস কে সুর চৌধুরী বলেন, “বৈধ চ্যানেলের বাইরে যারা রেমিটেন্স পাঠাচ্ছে তারা না জেনে নিজেদের ও দেশের ব্যাপক ক্ষতি করছেন। কারণ এভাবে পাঠানো টাকা এক পর‌্যায়ে কালো টাকায় রূপান্তরিত হয়। আবার হুন্ডির মাধ্যমে পাঠানো টাকা মাদক, চোরাচালান, মানবপাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়নে ব্যয় হয়।”

এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দেশের ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবির চেয়ারম্যান ইস্টার্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী রেজা ইফতেখার।

সর্বোচ্চ রেমিটেন্সের জন্য পুরস্কারপ্রাপ্তরা

যুক্তরাজ্য প্রবাসী মাহিউল মোহাম্মদ খান মুকিত, মীর আজমল আলী, শফি আহমেদ চৌধুরী, সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসি মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান, আবুল কালাম, জাফর আহমেদ, এ এ কে একরামুজ্জামান, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী রেজাউল হাসান, নিজাম মোহাম্মদ মিয়া, কুয়েত প্রবাসী জাকির হোসেন, নাজমুল হোসেন গাজী, ইমাদুল ইসলাম, হংকং প্রবাসী সাইদুর রহমান হাবিব, জার্মানী প্রবাসী সৈয়দ আব্দুল কাইয়ুম, ফিলিপাইন প্রবাসী আবু তাহের মোহাম্মদ আমানুল্লাহ, ইতালি প্রবাসী ওহিদ মোল্লা,  অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী মুকিতুর রহমান, মালয়েশিয়া প্রবাসী আহমাদুল আমিন ও পাপুয়া নিউগিনি প্রবাসী রবিন রহমান।

এছাড়া বিভিন্ন বন্ডে বিনিয়োগ করে অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন দুবাই প্রবাসী মোহাম্মদ অলিউর রহমান, আব্দুল করিম, আক্তার হোসেইন ও কানাডা প্রবাসী মিজান মোহাম্মদ জাহিদ।

এদের মধ্যে ১৭ জন ব্যবসায়ী, তিনজন চিকিৎসক, দুজন প্রকৌশলী, একজন পরামর্শক এবং একজন চাকুরে।

২৪ জনের মধ্যে আটজন এইচএসবিসি ব্যাংকের মাধ্যমে, পাঁচজন জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে এবং চারজন স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠিয়েছেন। আর বাকীরা সোনালী, অগ্রণী, আল আরাফাহ, ইউসিবিএল ও ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়েছেন।