আসামের গুয়াহাটিভিত্তিক একটি গবেষণা সংস্থার পরিচালিত এক জরিপে এই মত উঠে এসেছে।
প্রস্তাবিত বিসিআইএম করিডরটির আওতায় চীনের ইউনান প্রদেশ, বাংলাদেশ, মায়ানমার ও ভারতের সাড়ে ১৬ লাখ বর্গকিলোমিটারের বিশাল এই অঞ্চলের ৪৪ কোটি মানুষের পাশাপাশি থাকবে সড়ক, জল এবং আকাশ পথের যোগাযোগ ব্যবস্থা।
এনভায়রনমেন্ট সোশাল অ্যান্ড পলিসি রিসার্চ কেন্দ্র (সিইএসপিআর) পরিচালিত জরিপে অংশগ্রহণকারী ৮৬ শতাংশ মানুষ কলকাতা থেকে বাংলাদেশ, উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম এবং মনিপুরের ভেতর দিয়ে বিসিআইএম করিডোরের প্রস্তাবিত সড়ক যোগাযোগের পথ চালুর বিষয়ে ভারতের সম্মতি দেওয়া উচিত বলে মনে করে।
বিসিআইএম করিডোর সম্পর্কে ধারণা আছে এমন ৩০০ জনের ওপর ওই জরিপটি চালানো হয়, যাদের মধ্যে রাজনীতিবিদ, আমলা, গবেষক ও গণমাধ্যমকর্মীরা ছিলেন। আসাম, ত্রিপুরা, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, মনিপুর, মিজোরাম এবং অরুণাচল রাজ্য থেকে তাদের বাছাই করা হয়। তারা জরিপে থাকা ১৫টি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।
সম্প্রতি চীনের প্রেসিডেন্ট জি জিনপিংয়ের ভারত সফরের সময় বিসিআইএম করিডোরের বিষয়ে ভারত খুব একটা আগ্রহ না দেখানোয় সিইএসপিআর এ জরিপটি চালায়।
জরিপের ফল বলছে, ৩০০ জনের উত্তরদাতার মধ্যে ২৬৭ জন অর্থাৎ ৮৯ শতাংশ মানুষ করিডোর চালু হলে উত্তর-পূর্ব ভারতের অর্থনৈতিক উন্নতি হবে বলে মনে করেন।
২৫৫ জন অর্থাৎ ৮৫ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন বহুমুখী পদক্ষেপ ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় নানা সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে।
জরিপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে তথ্যটি উঠে এসেছে তা হলো- উত্তরদাতাদের মধ্যে ২৬০ জন অর্থাৎ ৮৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ মনে করেন না, যে বিএসআইএম করিডোরের ‘অপব্যবহার’ করবে চীন। করিডোরটি ভারতীয় নিরাপত্তার জন্য কোনো হুমকি নয় বলে উত্তর দিয়েছেন ২৫৬ জন অর্থাৎ ৮৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ মানুষ।
সাধারণভাবে ধারণা করা হয়, বিসিআইএম করিডোর চালু হলে অস্ত্র ও মাদক চোরাচালান বেড়ে গিয়ে মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপত্তাজনিত সঙ্কট তৈরি হবে।
২৫৩ জন বা মোট অংশ নেয়া উত্তর দাতাদের ৮৪ দশমিক ৩৩ শতাংম মনে করেন, বিআইসিএম বাস্তবায়নে উত্তর-পূর্ব ভারতের অর্থনৈতিক উন্নতি হবে এবং ধারাবাহিক সন্ত্রাস ও বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা কমে আসবে।
১৮৪ জন বা ৬১ দশমিক ৩৩ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন যৌথ নদীগুলোর পানি বণ্টন ইস্যু সংক্রান্ত আলোচনা বিসিআইএম-এর মতো ফোরামে আলোচনার জন্য উত্থাপিত হতে পারে।
২৫৪ জন বা ৮৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, বিসিআইম মহাসড়কের কিবহিতু দিয়ে অরুণাচল প্রদেশ পর্যন্ত সড়কের মত বেশ কিছু বিকল্প থাকা উচিত।
অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ২৮০ জন বা ৯৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ মনে করেন, ভারত ও চীনের উপস্থিতিতে এরকম একটি আর্থনৈতিক অঞ্চল যুক্তরাষ্ট্রের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
উত্তরদাতাদের বেশিরভাগই তাদের নিজ নিজ রাজ্যের ভেতর দিয়ে এই মহাসড়কের রুট হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন। তারা মনে করেন, উৎপাদিত পণ্য পরিবহন ছাড়াও ‘পর্যটনের প্যাকেজ’-এর ক্ষেত্রে এই মহাসড়কটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।