পরিশোধ পদ্ধতিতে বিপ্লব ঘটেছে: গভর্নর

দেশের পরিশোধ পদ্ধতিতে বড় ধরনের ‘বিপ্লব’ ঘটে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Nov 2014, 06:16 PM
Updated : 20 Nov 2014, 06:16 PM

বৃহস্পতিবার আন্তঃব্যাংক লেনদেন প্রযুক্তি ‘রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট’ (আটিজিএস) বাস্তবায়নে সুইডেনভিত্তিক কোম্পানি সিএমএ স্মল সিসটেম এবি’র সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

গভর্নর বলেন, “আমি যখন প্রথম গভর্নর হয়ে এই ব্যাংকে আসি, তখন মানুষ বস্তায় করে চেক নিয়ে আসতো নিকাশ করবার জন্য। মাথায় করে গাদা গাদা ফাইল নিয়ে আসতো সিআইবি ক্লিয়ারিংয়ের জন্য। সেই দিন শেষ হয়ে গেছে।”

তিনি মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংক এখন দক্ষিণ এশিয়ার ‘সবচেয়ে ডিজিটাইজড কেন্দ্রীয় ব্যাংক’।

গভর্নর আরও বলেন, “অটোমেটেড চেক ক্লিয়ারিং হাউজ (বিএসিএইচ) বাদেও আমরা ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ (এনপিএস) চালু করেছি। এই সুইচের সঙ্গে আমরা ইতোমধ্যে ২৯টি ব্যাংককে যুক্ত করতে সক্ষম হয়েছি।

“দেশে যতোগুলো এটিএম বুথ চালু আছে তার ৮৫ শতাংশ এই সুইচকে স্পর্শ করছে। এরপর আমাদের লক্ষ্য থাকবে পস (পিওএস) মেশিন ও মোবাইল ব্যাংকিংকে এর মধ্যে নিয়ে আসার।”

প্রায় ২ কোটি মানুষ মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব খুলেছে জানিয়ে আতিউর বলেন, “মোবাইল ব্যাংকিংকে এনপিএস’র মধ্যে আনতে পারলে বিদেশি কোন সুইচের জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে না। সস্তায়, সহজে আমরা এই সেবা আমরা দিতে পারবো।

“এতে বাংলাদেশে চালু হওয়া প্রায় দুই হাজার ই-কমার্স সেবাদাতা প্রতিষ্ঠারে কার্যক্রম আরো অনেক সহজ হবে, সস্তায় হবে। এর ফলে এই যানজট-ভিড় এড়িয়ে লোকজন ঘরে বসে বাজার করার সুযোগ পাবেন। এখনো করছেন। তখন আরও সহজ হবে।”

অনুষ্ঠানে গভর্নর বলেন, “আরটিজিএস চালু হলে এক মিনিটে এক ব্যাংকের গ্রাহকের ব্যাংক হিসাব থেকে অন্য ব্যাংকের গ্রাহকের ব্যাংক হিসাবে উচ্চ মূল্যের চেক অর্থাৎ ৫ লাখ টাকার বেশি অঙ্ক অনলাইনে লেনদেন করা যাবে।”

২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর নাগাদ আরটিজিএস চালু করা সম্ভব হবে বলে জানান ডেপুটি গভর্নর নাজনীন সুলতানা।

তাছাড়া অচিরেই এনপিএসের সঙ্গে পস মেশিন ও ইন্টারনেট ব্যাংকিংকে সংযুক্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।

ডেপুটি গভর্নর আবুল কাসেম বলেন, “দেশের পরিশোধ পদ্ধতি দ্রুত, নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য করতে আরটিজিএস চালুর উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।”

আরটিজিএস বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান সিএমএ স্মল সিসটেম এবি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যালেক্স নাজারভ বলেন, “প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত দশ বছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৩৪টি আরটিজিএস স্থাপনের কাজ করেছে সিএমএ।

“স্পেকট্রাম ইজ্ঞিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম লিমিটেড বাংলাদেশে সিএমএ’র স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছে।”

আরটিজিএস বাস্তবায়নে নিজ নিজ পক্ষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা এবং সিএমএর এমডি অ্যালেক্স নাজারভ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক ও  স্পেকট্রাম ইজ্ঞিনিয়ারিং কনসোর্টিয়ামের কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।