৪ বছরেই দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ: মুহিত

আগামী চার বছরের মধ্যে, অর্থাৎ বর্তমান সরকারের চলতি মেয়াদেই বাংলাদেশ ‘দারিদ্র্যমুক্ত’ হবে বলে মনে করছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Nov 2014, 11:44 AM
Updated : 20 Nov 2014, 04:25 PM

বৃহস্পতিবার এক সেমিনারে তিনি বলেন, “এ কথা বলার পর কেউ আমাকে পাগল বললেও বলতে পারেন। কিন্তু আমি বলছি, ২০১৮ সালের মধ্যে  আমাদের এই দেশ দারিদ্র্যমুক্ত হবেই হবে। আর ২০২১ সালের পরে দেশে কোনোভাবেই অতিদরিদ্র বলে কিছু থাকবে না।”

যাদের দৈনিক আয় এক ডলারের কম, জাতিসংঘের বিচারে তারাই দরিদ্র। এই হিসাবে ছয়শ কোটির বেশি জনসংখ্যার এই বিশ্বে প্রায় ১২০ কোটি মানুষ দরিদ্র।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে দেশের মোট জনসংখ্যার ২৬ শতাংশ বর্তমানে দরিদ্র। আর মাথাপিছু বর্ষিক আয় ১ হাজার ১৯০ ডলার, অর্থাৎ, দিনে তিন ডলারের বেশি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের কোনো দেশই একেবারে দারিদ্র্যমুক্ত নয়। তাই দারিদ্র্যসীমা ১৫ শতাংশের নিচে নেমে এলে একটি দেশকে ‘দারিদ্র্যমুক্ত’ বলে ধরা হয়।

“আমাদের হিসাবে ২০১৮ সালে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার নেমে আসবে ১৪ শতাংশে।  তখন বাংলাদেশকে দারিদ্র্যমুক্ত বলা যাবে।”

অর্থমন্ত্রী বেশ জোর দিয়েই দাবি করেন, “বিশ্ব ব্যাংক বলছে, ২০৩০ সালের পর বাংলাদেশ দারিদ্র্যমুক্ত হবে। আর আমি বলছি, ২০২১ সালের পর বাংলাদেশে অতিদরিদ্র বলে কিছু থাকব না।”

সরকারি প্রতিষ্ঠান সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট  ফাউন্ডেশন -এসডিএফ রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এলজিইডি মিলনায়তনে এ সেমিনারের আয়েজন করে।  ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে কাজ করছে এ সংস্থাটি।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান।  অন্যদের মধ্যে বিশ্ব ব্যাংকের পরিচালনা উপদেষ্টা ক্রিস্টিন ই কাইমস, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান -বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক বিনায়ক সেন, এসডিএফের চেয়ারম্যান এম আই চৌধুরী সেমিনারে বক্তব্য দেন।

সরকারের বিশেষায়িত সংস্থা এসডিএফ ২০০০ সাল থেকে দারিদ্র্য বিমোচনে কাজ করছে।

সেমিনারে জানানো হয়, প্রতিষ্ঠার পর গত ১৪ বছরে এই সংস্থার নানাবিধ কর্মকাণ্ডে ১০ লাখ পরিবার দারিদ্র্য সীমার বাইরে এসেছে।

দেশের ১৬ জেলায় দুই হাজারের বেশি গ্রাম সমিতির মাধ্যমে আয়-বর্ধনমূলক নানা কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন করছে সংস্থাটি।

এসডিএফের প্রধান কর্মসূচি ‘নতুন জীবন’র অর্জনে সন্তুষ্ট ঋণদাতা সংস্থা বিশ্ব ব্যাংক।

সেমিনারে এই প্রকল্পে আরো ২০ কোটি ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি ক্রিস্টিন কায়েম।

গরীব মানুষের সংখ্যা কমিয়ে আনতে এসডিএফ- এর কর্মকাণ্ডে সন্তোষ প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, “ঋণের সুদের হার বাড়াতে হবে। দীর্ঘদিন ১০ শতাংশ সুদে ঋণ দিলে অভ্যাস হয়ে যাবে। প্রতিষ্ঠানকে টিকিয়ে রাখাও কষ্টকর হবে।”

এসডিআরের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “নিজেদের মোটামুটিভাবে স্বাবলম্বী হতে হবে। সে কারণে ১০ শতাংশ সুদ একটু উঁচু করতে থাকেন।”

ভবিষ্যতে নতুন কর্মসূচি নেওয়ার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও পুষ্টির বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়ার আহবান জানিয়ে মুহিত বলেন, “স্বাস্থ্য সেবায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। একটি বিষয় সবাইকে মনে রাখতে হবে, একটি পরিবারের একজন লোক অসুস্থ হলে সেই পরিবার শেষ হয়ে যায়।”