বুধবার প্রতিষ্ঠানটির বোর্ড সভায় মন্ত্রী বলেন, “গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিআইডিএসকে সেন্টার অফ একসিলেন্স হিসেবে তৈরি করা হবে। এ প্রতিষ্ঠান থেকে বাস্তবসম্মত ব্যবহারিক গবেষণা যেমন করা হবে তেমনি উচ্চতর ডিগ্রিও দেয়া হবে।
এই প্রতিষ্ঠানটিকে বিশ্বমানের করতে যা যা করার প্রয়োজন তাই করবো আমরা। যাতে করে আমরা আমাদের উন্নয়নের জায়গাগুলো চিহ্নিত করে সঠিক ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিতে পারি।”
বোর্ড সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “গবেষণা যদি বাস্তবতাকে প্রতিফলিত না করে তাহলে কিছুতেই সঠিক পরিকল্পনা নেয়া যাবে না। আর এতে সম্পদ বাড়বে না। সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির পথ আরও দীর্ঘ হবে।”
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিআইডিএস অফিসে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক মোস্তফা কে মুজেরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক বর্তমান ট্রাস্ট্রি বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক রেহমান সোবহান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান এ কে আজাদ চৌধুরী, পরিকল্পনা সচিব ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম, বিআইডিএস-এর গবেষণা পরিচালক রুশিদান ইসলাম রহমান প্রমুখ।
ভবিষ্যতে বাংলাদেশে কোন পরিকল্পনাকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হবে- এ প্রশ্নের মুস্তফা কামাল বলেন, "বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে মানুষের কাছে সহজলভ্য করে তোলা হবে। যাতে করে আমাদের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ব্যাপকভাবে বিকশিত হয়।"
‘এজন্য সৌর বিদ্যুৎকে খুবই গুরুত্ব দিতে হবে’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “পৃথিবী প্রতি এক সেকেন্ডে যে সৌর শক্তি গ্রহণ করে তা পাঁচ লাখ টন কয়লা থেকে প্রাপ্ত শক্তির সমান। আর একঘন্টায় পৃথিবী সূর্য থেকে যে শক্তি নিয়ে থাকে তা দিয়ে সব মানুষের ১ বছরের প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব।
“সত্যিকার অর্থেই অগ্রসরমান ধ্যান-ধারণা নিয়ে আগামীর জন্য পরিকল্পনা নিতে হবে। এসব কাজ সম্পন্ন করতে হলে গুণগত মানসম্পন্ন গবেষণার কোন বিকল্প নেই,” বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
বিআইডিএসকে বিশ্বমানের গবেষণা প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করতে হলে জনবল এবং বাজেট বাড়ানো এক প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল বলেন, “জনবল ও বাজেট অবশ্যই বাড়বে। সেইসঙ্গে আমাদের যে সব গবেষক পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছেন তারা যাতে এখানে এসে গবেষণা কাজ করতে পারেন সে ব্যবস্থা করা হবে।
“শুধু তাই নয় বিআইডিএসকে উচ্চতর ডিগ্রিও প্রদান করতে হবে,” বলেন মন্ত্রী।
গবেষণা কাজে দৈন্যতার বিষয়টি উল্লেখ করে রেহমান সোবহান বলেন, “গত সতেরো বছর ধরে বিআইডিএস-এ রিসার্চ রিভিউ হচ্ছে না। কাজেই গবেষণা মানসম্মত কি না, আরও কিছু সংযোজন করতে হবে কি না- তা বোঝা যাচ্ছে না।”
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “আমাদেরকে এগোতে হলে এখন বাস্তবধর্মী প্রায়োগিক গবেষণার সাহায্য নিতেই হবে। বিআইডিএস-কে দিয়েই এ কাজটি শুরু করা যেতে পারে।”
‘সরকার শিক্ষাখাতে অর্থায়নকে ভবিষ্যতের বিনিয়োগ হিসেবেই বিবেচনা করছে’ উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “আপনারা খেয়াল করে দেখবেন, আমরা প্রতিটি একনেক সভায় শিক্ষা সংক্রান্ত প্রকল্পের অনুমোদন দিচ্ছি। বিআইডিএসের জন্যও বরাদ্দ বাজেট বাড়ানো হবে।”
গবেষণা কাজের জন্যে সম্মানির হারও বাস্তবসম্মত করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
আগারগাঁওয়ে বিআইডিএস অফিসে এ সভা হয়।
সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা নিয়ে মতবিনিময়
বিকেলে শেরে বাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা নিয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পরিকল্পনামন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, পরিকল্পনা সচিব ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম এবং ব্যবসায়ী নেতা ও ব্যাংকাররা বক্তব্য রাখেন।