লোকসানি শাখা বাড়ছে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর

সরকারি মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর লোকসানি শাখার সংখ্যা এক বছরে ২৯টি বেড়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Oct 2014, 02:06 PM
Updated : 29 Oct 2014, 05:28 PM
২০১৩-১৪ অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংক মিলে অলাভজনক শাখা আগের বছরের থেকে ২২ শতাংশ বেড়ে ২৯৪টিতে দাঁড়িয়েছে।

তার আগের অর্থবছরে এই ব্যাংকগুলোর অলাভজনক শাখার সংখ্যা ছিল ২৬৫টি।

বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপস্থাপিত অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোনালী ব্যাংকের এক হাজার ২০৪টি শাখার মধ্যে লোকসানি শাখার সংখ্যা গত অর্থবছরের চেয়ে ১৩টি বেড়ে ৬৫টি হয়েছে। অগ্রণী ব্যাংকের ৯০৫টির মধ্যে লোকসানি শাখা গত অর্থবছরের থেকে ১৭টি বেড়ে ৭৫টি হয়েছে। রূপালী ব্যাংকের ৫৩২টি শাখার মধ্যে অলাভজনক শাখা ১৬টি বেড়ে ২৮টি হয়েছে। বেসিক ব্যাংকের ৬৮টি শাখার মধ্যে ৩৩টিই লোকসানে রয়েছে।

তবে গত অর্থবছরে জনতা ব্যাংকের লোকসানি শাখার সংখ্যা কমেছে। ব্যাংকের ৯০০টি শাখার মধ্যে লোকসানি শাখা ১০২ থেকে কমে ৯৩টি হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ ব্যাংকগুলোর জন্য অন্যতম সমস্যা। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ছয়টি ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২৪ হাজার ৭৪৮ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২৫ দশমিক ৪০ শতাংশ।

ব্যাংক খাতের মোট খেলাপি ঋণের ৪৮ শতাংশই এই ছয়টি ব্যাকের। খেলাপি ঋণের ৮০ শতাংশ মন্দ শ্রেণিভুক্ত হওয়ায় ব্যাংকের প্রভিশনের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে, যা মূলধনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

সংসদীয় কমিটির সদস্য শওকত চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কমিটি ব্যাংকগুলোর ঋণ প্রদানের ওপর নজরদারি বাড়াতে বলেছে। ব্যাংকের কাজ হচ্ছে ঋণ দেওয়া। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে সেটি প্রকৃত ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের কাছে যাচ্ছে কি না।

“ব্যাংকগুলোকেও দেখতে হবে ঋণের টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে নাকি, বিনিয়োগে রয়েছে।”

কমিটির কার্যপত্র থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, জুন পর্যন্ত জনতা, অগ্রণী, বিডিবিএল ও রূপালী ব্যাংক কর ও প্রভিশনপরবর্তী নিট মুনাফা অর্জনে সক্ষম হলেও সোনালী ও বেসিক ব্যাংকের ঋণাত্মক মুনাফার পরিমাণ যথাক্রমে ৫৮৬ ও ৫ কোটি টাকা।

ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি দূর করতে গতবছর সরকার সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংককে যথাক্রমে এক হাজার ৯৯৫ কোটি, ৮১৪ কোটি, এক হাজার ৮১ কোটি ও ২১০ কোটি টাকা পুনঃমূলধনী সহায়তা দিয়েছে। এর পরও সোনালী ও রূপালী ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি যথাক্রমে এক হাজার ৫১১ কোটির ও ২১৭ কোটি টাকা। অপরদিকে বেসিক ব্যাংকের মূলধন ঘাটতির পরিমাণ এক হাজার ৬৭৬ কোটি টাকা।

কমিটির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, টিপু মুনশি, ফরহাদ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, মো. শওকত চৌধুরী ও আখতার জাহান চৌধুরী বৈঠকে অংশ নেন।