চাল রপ্তানির সঙ্গে বাড়ছে আমদানিও

বাংলাদেশ যখন চাল রপ্তানি করতে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কায়, তখন তা আমদানিও বাড়ছে; যা প্রধান খাদ্য শস্যের রকম ভেদে ঘাটতির চিত্র তুলে ধরেছে বলে গবেষকদের মূল্যায়ন।

শেখ আবদুল্লাহবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Oct 2014, 05:03 PM
Updated : 27 Oct 2014, 05:04 PM

শ্রীলঙ্কায় ৫০ হাজার টন চাল রপ্তানির বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী কথা বলার পর সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের আমদানি বিষয়ক সর্বশেষ প্রতিবেদন দেখে চাল আমদানি বাড়ার তথ্য পাওয়া যায়।

চালের পাশাপাশি চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ভোগ্যপণ্যসহ সামগ্রিক আমদানিও বেড়েছে বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে চাল আমদানি বেড়েছে।

এই সময়ে চাল আমদানির জন্য ব্যাংকগুলোতে ১০ কোটি ৩৬ লাখ ৩০ হাজার ডলারের ঋণপত্র (এলসি) খোলা হয়েছে। এর মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে ৯ কোটি ৭ হাজার ডলারের এলসি।

গত অর্থবছরের তুলানায় ৫৬ শতাংশ বেশি এলসি খোলা হয়েছে এই বছরে।

২০১৩-১৪ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে চাল আমদানির জন্য ৬ কোটি ৬৪ লাখ ৩০ হাজার ডলারের এলসি খোলা হয়েছিল। ওই সময়ে এলসি নিষ্পত্তি হয়েছিল ৫ কোটি ৯ লাখ ২০ হাজার ডলারের।

সোমবার সচিবালয়ে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভা শেষে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম শ্রীলঙ্কায় প্রতি টন ৪৫০ ডলার দরে ৫০ হাজার টন চাল রপ্তানির কথা বলেন।

১৮ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিসভা এই চাল রপ্তানির অনুমোদন দেয়। আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে রপ্তানি প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী।

বাংলাদেশ থেকে স্বল্প পরিসরে সুগন্ধি চাল রপ্তানি হলেও সিদ্ধ চাল রপ্তানি এবারই প্রথম হচ্ছে, যা যাচ্ছে প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কায়।

বিআইডিএসের সাবেক গবেষণা পরিচালক এম আসাদুজ্জামান এ বিষয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শ্রীলঙ্কায় যে চাল রপ্তানি হচ্ছে তা সরকারি পর্যায়ে। আর আমদানি হচ্ছে বেসরকারি পর্যায়ে।

“দেশে মোটা চালের উৎপাদন বেড়েছে। আবার মোটা চালের চাহিদা কমেছে। যে কারণে সরকার রপ্তানি করতে পারছে।”

মোটা চালের চাহিদা কেন কমেছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “মানুষের আয় বেড়েছে। সে কারণে তারা একটু বেশি দামের সরু চাল কিনছে।”

“এখন বেসরকারি খাতে যে চাল আমদানি হচ্ছে তা আসলে সরু চাল,” বলেন এই কৃষি গবেষক।

শুধু চালই নয়, অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে সব ধরনের ভোগ্য পণ্য আমদানিই বেড়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়।

এই সময়ে আমদানির জন্য সর্বমোট ১ হাজার ৮৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারের ঋণপত্র (এলসি) খোলা হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একইসময়ের তুলনায় ১২ দশমিক ৮১ শতাংশ বেশি।

এই সময়ে চিনি আমদানিতে ৪৬ শতাংশ, ডাল আমদানিতে ৮৯ দশমিক ১০ শতাংশ, দুগ্ধজাত খাবার আমদানিতে ৪৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ, পরিশোধিত ভোজ্যতেল আমদানিতে ৩০ দশমিক ২০ শতাংশ এলসি খোলার হার বেড়েছে।

এই সময়ে মূলধনী যন্ত্রপাতির জন্য খোলা আমদানির এলসিও গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৯ দশমিক ৮২ শতাংশ বেড়েছে।