৬৯ সরকারি প্রতিষ্ঠান লাভে, লোকসানে ১৯টি

গত অর্থবছরে ৬৯টি সরকারি প্রতিষ্ঠান লাভ করেছে, অন্যদিকে ১৯টি প্রতিষ্ঠান লোকসান দিয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Oct 2014, 12:00 PM
Updated : 20 Oct 2014, 12:02 PM

সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

এদিনের বৈঠকে উপস্থাপিত মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর ২০১৩-১৪ অর্থবছরের কার্যাবলি সম্পর্কিত বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “২০১৩-১৪ অর্থ বছরে ৬৯টি সরকারি প্রতিষ্ঠান লাভ করেছে। লাভ করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা আগের তুলনায় বেড়েছে। একই সময়ে ১৯টি সরকারি প্রতিষ্ঠান লোকসান দিয়েছে।”

লোকসানের বিষয়ে তিনি বলেন,  “নানা কারণে সরকারি প্রতিষ্ঠান লোকসান দেয়। সেবা দেওয়াই এ সব প্রতিষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য থাকে।”

লাভে থাকা প্রতিষ্ঠান

গত অর্থবছরে লাভজনক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে বাপেক্স, তিতাস গ্যাস ট্যান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড (জিটিসিএল), মেঘনা পেট্রোলিয়াম, যমুনা অয়েল, সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক।

লোকসান দেওয়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি), ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি)।

সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর লাভ-লোকসানের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

লোকসানি প্রতিষ্ঠান

তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কাজের বার্ষিক প্রতিবেদন মন্ত্রিসভাকে দিতে হয়। মন্ত্রিসভা ২০১৩-১৪ অর্থ বছরের আর্থিক প্রতিবেদন সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। প্রতিবেদনে কিছু পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশও রয়েছে।

গত অর্থ বছরের কার্যক্রম সন্তোষজনক দাবি করে মোশাররাফ হোসাইন বলেন, “২০১২-১৩ অর্থ বছরের মাথাপিছু আয় এক হাজার ৪৪ ডলার থেকে বেড়ে ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে হয়েছে এক হাজার ১৯০ ডলার। রপ্তানি বেড়েছে ১১ দশমিক ৬৯ শতাংশ। রাজস্ব আদায় বেড়েছে আট দশমিক ৩৫ শতাংশ।”

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আগের বছরের তুলনায় ৪০ দশমিক ৪৪ শতাংশ বৃদ্ধি এবং বিদ্যুতের উৎপাদন ১৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধির বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি কমেছে এক দশমিক ০৯ শতাংশ। আগের অর্থবছরে ছিল ৮ দশমিক ০৬ শতাংশ এবং ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ছিল ৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ।

তিনি জানান, এই সময়ে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১১ কোটি ৬২ লাখ, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা হয়েছে তিন কোটি ৮৯ লাখ।”

২০১৩-১৪ অর্থ বছরে কৃষি উৎপাদন, পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্য সেবার সব সূচকে উন্নতি হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

২০১৩-১৪ অর্থ বছরে ২৪২টি প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও শেষ হয়েছে ২২৯টির কাজ, বলেন তিনি।

প্রতিবেদনে যেসব সুপারিশ করা হয়েছে, মন্ত্রিসভা তা গ্রহণ করেছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “নীতি ও কর্মসূচি বাস্তবায়নে আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় আরও জোরদার করার সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রকল্প বাস্তবায়নে বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও তদারকি আরও নিবিড় করা, শূন্য পদ পূরণ ত্বরান্বিত করা, সরকারি সুবিধা নিয়ে গণশুনানি কার্যক্রম জোরদারের সুপারিশও এর মধ্যে রয়েছে।

সুপারিশের মধ্যে আরও রয়েছে- বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা উন্নত করা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় স্বেচ্ছাসেবীদের প্রশিক্ষণ, নাগরিকদের তথ্য অধিকার নিশ্চিতে ওয়েবসাইট সমৃদ্ধ করা, ইনোভেশন টিম সক্রিয় করা খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল রোধে সচেতনতা জোরদার, ই-টেন্ডারিং কার্যক্রম জোরদার, চিকিৎসকদের কর্মস্থলে রাখতে তদারকি জোরদার ইত্যাদি।