অভ্যন্তরীণ চাহিদা ধরে রাখবে সরকার: অর্থমন্ত্রী

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য আগামী পাঁচ বছর অভ্যন্তরীণ চাহিদার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে শিল্পোদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা চেয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Oct 2014, 01:25 PM
Updated : 18 Oct 2014, 01:25 PM

শনিবার সকালে রাজধানীতে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) ১১০ বছরপূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধনীতে এই প্রত্যাশার কথা জানান তিনি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের অর্থনীতি এগোচ্ছে। গত পাঁচ বছরে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ও সম্পদের গতিশীলতা ৩ শতাংশ বেড়েছে। এর আগে ৩০ বছরে এই পরিমাণ বেড়েছিল।

“এই উন্নয়নের মূলে রয়েছে কৃষক ও স্বল্প প্রশিক্ষিত শ্রমিকের ‘ডেডিকেশন’ ও ‘কমিটমেন্ট’। এর সাথে রয়েছে অভ্যন্তরীণ চাহিদা। আগামী পাঁচ বছর এই চাহিদার ধারাবাহিকতা যাতে বজায় থাকে আমরা সেই ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

মুহিত বলেন, “এক্ষেত্রে শিল্পোদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা সহযোগিতা করবেন বলে আশা করছি।”

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এমসিসিআইয়ের এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী।

এমসিসিআই সভাপতি রোকেয়া আফজাল রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী পর্বে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালামও শুভেচ্ছ বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে দেশের বিশিষ্ট শিল্পোদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী, অর্থনীতিবিদ, সরকারি কর্মকর্তা ও কূটনীতিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমি এমসিসিআইকে গত ৬০ বছর ধরে চিনি। সংগঠনটি দেশের আর্থিক খাতের উন্নয়নে অনেক কাজ করে আসছে। বিশেষ করে নীতি প্রণয়নে সরকারকে সহযোগিতা করে এবং শিল্পোদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছে।”

তোফায়েল আহমেদ বলেন, “অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়ছে, বাড়ছে রপ্তানি আয়। এখন রপ্তানি পণ্য বাড়ানোর চেষ্টা করছি। এক সময় আমরা খাদ্য ঘাটতির দেশ ছিলাম, এখন আমরা খাদ্য রপ্তানি করছি। এবছর শ্রীলংকাতে ৫০ হাজার টন চাল রপ্তানির বিষয়ে চুক্তি হয়েছে।

“অর্থাৎ দেশ এগোচ্ছে। গ্রামে গেলে এখন চারিদিকে উন্নয়নের ছোয়া দেখতে পাই।”

গওহর রিজভী বলেন, “বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। গত পাঁচ বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন ৭৫ শতাংশ বেড়েছে। পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, রূপপুর পরমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন ও রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে। আশা করছি, আরও এগোবো।

“এখন দরকার সম্পদের সুষম বণ্টনের। কারণ সম্পদের সুষম বণ্টন হলে উন্নয়ন টেকসই হবে।”

স্বাগত বক্তব্যে রোকেয়া আফজাল রহমান বলেন, “বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে, বিশেষ করে তৈরি পোশাক, জাহাজ তৈরি ও ওষুধ শিল্পে এগোচ্ছে। আরো এগোনোর সুযোগ আছে।

“চীন ছোট শিল্প স্থাপন করে অনেক এগিয়েছে। আমরা চায়না মিরাকল চাই না, চাই বাংলাদেশি মিরাকল। বাংলাদেশের সেই ক্ষমতা আছে। দরকার প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও নীতি সহায়তা।”

নীতি প্রণয়নে এমসিসিআই সবসময় সরকারের পাশে থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন দেশের ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে পুরনো এই সংগঠনের প্রেসিডেন্ট।

উদ্বোধনী পর্বের শেষে এক শুভেচ্ছা বক্তব্যে এপিজে আব্দুল কালাম বলেন, মানুষই জাতিকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যায়। এজন্য মানুষ গড়ার বিষয়ে সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। উপমহাদেশে মানুষ বিশাল সম্পদ।

ভারতের সাবেক এই রাষ্ট্রপতি মনে করেন, মানুষ গড়ার প্রধান জায়গা হচ্ছে পরিবার আর শিক্ষালয়। বাবা, মা ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাই জাতি গঠনে প্রধান ভূমিকা রাখেন।

“উন্নতির জন্য আমাদের সকলের সেদিকে মনোযোগ দিতে হবে।” 

অনুষ্ঠানে এমসিসিআইর নতুন লোগো ও দুটো বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।