যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটির সর্ব পশ্চিমের বরো কুইন্সের ‘মউরিয়া’ পার্টি' হলে ২৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাতে এক অনুষ্ঠানে গর্ভনর বলেন, "রাজনৈতিক স্থিতি অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশের চলমান অগ্রগতি কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। রাজনৈতিক হানাহানি না থাকলে বাংলাদেশ এখন আরো অনেক ওপরে চলে যেত।
"প্রবাসীরা হচ্ছেন জাতীয় বীর। আপনারাই বাংলাদেশের প্রকৃত বীর। প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থে বাংলাদেশ আজ অর্থনৈতিকভাবে মাথা উচুঁ করে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে।"
গভর্নর বলেন, "যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপানসহ এশিয়া, ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিনিয়োগকারিরা বাংলাদেশে যাচ্ছেন। ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের অর্থনীতির গতি। এ ধারা অব্যাহত রাখতে প্রবাসীদের ভূমিকা অনেক বেশি। সারাবিশ্ব যখন মন্দায় ক্ষত-বিক্ষত, সেই সময়ে প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থ বাংলাদেশকে চাঙ্গা রেখেছিল। মানুষের অর্থনৈতিক বৈষম্যও দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে।"
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালের প্রথম আট এক হাজার মাসে (জানুয়ারি-অগাস্ট) রেমিটেন্স এসেছে ১০১০ কোটি ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেশি।
গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ১৪ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। যা ছিল আগের বছরের (২০১২-১৩) চেয়ে ১ দশমিক ৬১ শতাংশ কম। গত অগাস্টে ১১৬ কোটি ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
‘জামালপুর জেলা সমিতি’ আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে আতিউর রহমান বলেন, "প্রতিবেশী ভারতের মানুষদের গড় আয়ুর চেয়ে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু চার বছর বেশি। গায়ে কাপড় নেই, পায়ে জুতা নেই-এমন কোন দৃশ্য এখন আর বাংলাদেশে দেখা যায় না। এধরনের অসংখ্য সাফল্যের কাহিনী বাংলাদেশের রয়েছে। বাংলাদেশ এখন সম্মুখে এগিয়ে চলার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের উদাহরণে পরিণত হয়েছে।"
জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি'র (ইউনেম) উপদেষ্টা পরিষদের শীর্ষ বৈঠকে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে অবস্থান করছিলেন গভর্নর।
এই অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য মাহজাবিন খালেদ, প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আবুল কালাম আজাদ, এফবিসিসিআই-এর পরিচালক রেজাউল করিম রেজনু, আনোয়ার সাদাত এবং প্রধানমন্ত্রীর অফিসের প্রটোকল অফিসার খোরশেদ আলম রনিও বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে সাংসদ মাহজাবিন খালেদ বলেন, "বাংলাদেশকে তার মূল চেতনায় ফিরে আনতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সকলে একযোগে কাজ করছি। একাত্তরের পরাজিত শক্রুরা আবারো ষড়যন্ত্রে নেমেছে, সেই ষড়যন্ত্রের বিষদাঁত ভেঙ্গে দিতে প্রবাসীদেরও সোচ্চার থাকতে হবে।"
আবুল কালাম আজাদ প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে বলেন, " যে প্রাইমারি ও অথবা হাই স্কুলে আপনি পড়েছেন, সে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা দুপুরের খাবার পাচ্ছে কি না তার খোঁজ নিন। যদি না পেয়ে থাকে তাহলে সে উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে।
"এছাড়া ওই স্কুলের মেধাবী অথচ গরিব ছাত্র-ছাত্রীকে উচ্চতর শিক্ষার জন্যে বৃত্তি চালু করা যেতে পারে। এভাবে যদি প্রত্যেক প্রবাসী এগিয়ে যান তাহলে বাংলাদেশের শিক্ষার অগ্রগতি ত্বরান্বিত হবে। শিক্ষায় বিনিয়োগ হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ট বিনিয়োগ।"
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি সালেহ শফিক গেন্দার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক জিন্নত আলী খোকার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠান স্বাগত বক্তব্য দেন নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত বাংলা পত্রিকা 'সাপ্তাহিক ঠিকানা'র সম্পাদক লাবলু আনসার।
এতে আরো বক্তব্য দেন যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আলম, জামালপুর সমিতির সাবেক সভাপতি নাজমুল হক, বাদল রহমান জিল্লু, প্রধান নির্বাচন কমিশনার সাহদ হোসেন বাবু, যুক্তরাষ্ট্র পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের সভাপতি আশরাফুজ্জামান প্রমুখ।