ইসলামি ব্যাংকগুলোর জন্য পুনঃঅর্থায়ন তহবিল

সুনির্দিষ্ট কয়েকটি খাতে উদ্বৃত্ত তারল্য বিনিয়োগের সুবিধার্থে শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Sept 2014, 02:03 PM
Updated : 21 Sept 2014, 02:42 PM

রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে সার্কুলার জারি করে সংশ্লিষ্ট সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের বিষয়টি জানানো হয়েছে।

সার্কুলারে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকে ইসলামী ব্যাংকগুলোর যে পরিমাণ অর্থ জমা রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে বর্তমানে তার চেয়ে বেশি রাখা আছে। এই উদ্বৃত্ত তারল্য কিভাবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সঞ্চালন ও শিল্পায়ন কাজে ব্যবহার করা য়ায় সেই লক্ষ্যে এই তহবিল গঠন করা হচ্ছে।

“বিশেষ করে কৃষিজাতপণ্য প্রক্রিয়াকরণ, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা খাত এবং নবায়ণযোগ্য জ্বালানি ও পরিবেশবান্ধব উদ্যোগে এই তহবিলের অর্থ বিনিয়োগ করা হবে।”

এই তহবিল গঠনের জন্য ইসলামিক রিফাইন্যান্স ফান্ড নামে একটি অ্যাকাউন্টও খোলা হয়েছে। ইসলামী ব্যাংকগুলো তাদের সুবিধা অনুযায়ী এই অ্যাকাউন্টে অর্থ জমা করবে।

সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এ তহবিলে তিনমাস মেয়াদী নবায়নযোগ্য বিনিয়োগ করতে পারবে এবং এই তহবিল থেকে আলোচ্য খাতগুলোতে পুনঃঅর্থায়নের মেয়াদও হবে তিন মাস, যা সচল ও অশ্রেণিতকৃত থাকা সাপেক্ষে মূল অর্থায়নের বিনিয়োগকাল পর্যন্ত নবায়নযোগ্য।

তহবিলের মুনাফা সম্পর্কে সার্কুলারে বলা হয়েছে, তহবিল থেকে পুনঃঅর্থায়ন যোগানের ওপর মুনাফার বা মার্কআপের হার হবে আবেদনকারী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মুদারাবা সঞ্চয়ী হিসাবের বিদ্যমান মুনাফার হার অথবা পাঁচ শতাংশের মধ্যে যেটি কম। এই তহবিল থেকে অর্জিত মুনাফা তহবিল যোগানদাতা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ স্থিতির অনুপাত অনুযায়ী বণ্টন করা হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক এ থেকে কোনো মুনাফা অর্জন করবে না।

তহবিল ও পুনঃঅর্থায়ন পরিচালনা, পরিশোধসূচি ও আদায়ের বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ওই সার্কুলারে। তাছাড়া তহবিল সংক্রান্ত শর্তাদির বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক সময় সময় প্রয়োজনী নির্দেশনা দেবে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, দেশের প্রচলিত ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে নগদ জমা সংরক্ষণের (সিআরআর) অতিরিক্ত নগদ জমাসহ বাংলাদেশের ভেতরে সহজে বিনিময়যোগ্য সম্পদের (এসএলআর) রক্ষণীয় মাত্রা দৈনিক ভিত্তিতে তাদের মোট তলবি ও মেয়াদি দায়ের ১৩ শতাংশ এবং ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর জন্য এই মাত্রা ৫ দশমিক ৫ শতাংশ রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে, যা চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে এই মাত্রা কার্যকর রয়েছে।

সেই হিসাবে চলতি বছরের জুন শেষে বেসরকারি খাতের ইসলামি ব্যাংকগুলোর রক্ষণীয় বিধিবদ্ধ তারল্য চার হাজার ৮৩৬ কোটি ১৫ লাখ টাকার বিপরীতে ব্যাংকগুলোর মোট তারল্য সম্পদের পরিমাণ ছিল ১৬ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা।