প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে, সময়ও

গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশে সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলোর গড় ব্যয় ৪২ শতাংশ বেড়েছে।এই সময়ে এই প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নের গড় মেয়াদ বেড়েছে তিন বছর।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Sept 2014, 05:07 PM
Updated : 17 Sept 2014, 05:07 PM

বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন বিষয়ক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাপানের উন্নয়ন সংস্থা- জাইকার সহায়তায়  ‘স্ট্রেনদেনিং পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এসপিআইপিএস)’ প্রকল্পের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে এ প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়।

পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগের যুগ্ম প্রধান সায়েদুল হক ও এসপিআইপিএস প্রকল্পে টিম লিডার তোশি আসো কাতো যৌথভাবে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত পাঁচ বছরে সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের গড় হার ছিল ৭৩ শতাংশ।

“বাস্তবায়নের এ হার মোটামুটি সন্তোষজনক। তবে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে এই পাঁচ বছরে এডিপিভুক্ত প্রকল্পগুলোর গড় ব্যয় ৪২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নের গড় সময়ও বেড়েছে ৩ বছর।”

এ সব তথ্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন,পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগকে থেকে নেওয়া হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী  আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, “এটা ঠিক যে, আমাদের প্রকল্পগুলোর ব্যয় ও মেয়াদ বৃদ্ধি হচ্ছে, যা মোটেই কাম্য নয়।”

এ সমস্যা থেকে রেহাই পেতে অর্থনীতিতে সত্যিকার অর্থে অবদান রাখবে- এমন প্রকল্প নির্বাচন করতে এবং উন্নত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আহ্বান জানান তিনি।

“আমাদের দেখা দরকার আমরা আমাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ কত দ্রুত ফেরত পেতে পারি। সেই সাথে দেখতে হবে প্রকল্পগুলো কেমন কর্মসংস্থান তৈরি করছে এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে কতটুকু অবদান রাখছে,” বলেন মুস্তফা কামাল।

পরিকল্পনা  সচিব ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম সভাপতিত্ব অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে জাইকার ঢাকা অফিসের প্রধান মিকিও হাতায়েদা বলেন “বাংলাদেশ সরকারকে ২০২১ সালের মধ্যে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে হলে প্রকল্প বাস্তবায়নের গুণগত মানের দিকে নজর দিতেই হবে।

“এজন্য সরকারি বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির প্রকল্পের বাস্তবায়ন হার ভাল হলেও এর গুণগত মান নিয়ে ভাবার সময় এসেছে।”

প্রতিবেদনে প্রকল্পের সার্বিক উদ্দেশ্য অর্জন করতে হলে প্রকল্প প্রণয়নের ধাপগুলোকে আরও গতিশীল করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

“এক্ষেত্রে সুব্যবস্থাপনা, আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমাতে হবে। সেই সাথে পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন ব্যবস্থাপনাকে আধুনিকায়ন করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে প্রকল্প যেন পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।”

উন্নয়ন প্রকল্পে সরকারি বিনিয়োগকে কার্যকর করে সামষ্টিক অর্থনৈতিক লক্ষমাত্রা অর্জনের জন্যে ‘স্ট্রেনদেনিং পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ শীর্ষক প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে সরকার।

এই প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০ কোটি টাকা। এতে জাইকা দেবে ৪০ কোটি টাকা, বাকি ১০ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে খরচ করা হবে।

২০১৭ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে বলে আশা করা হয়েছে।