এআইআইবির সদস্য হচ্ছে বাংলাদেশ

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চীনের উদ্যোগে প্রস্তাবিত এশিয়ান অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকের (এআইআইবি) সদস্য হওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ।

আবদুর রহিম হারমাছি প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Sept 2014, 04:12 PM
Updated : 18 Sept 2014, 08:43 AM

আগামী মাসে চীনের সঙ্গে এ বিষয়ে একটি সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হবে।

বুধবার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “বৈঠকে এআইআইবি’র সদস্য হওয়ার ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী মাসে চীনের সঙ্গে এ বিষয়ে একটি এমওইউ স্বাক্ষরেরও সিদ্ধান্ত হয়েছে।”

১০০ বিলিয়ন ডলার পরিশোধিত মূলধনের (পেইড অব ক্যাপিটাল) এই ব্যাংকে চীন সরকার একাই দেবে ৫০ বিলিয়ন ডলার। বাকি ৫০ বিলিয়ন ডলার সদস্য দেশগুলো যোগান দেবে।

এই ব্যাংকের সদস্য হতে ইতিমধ্যেই বাংলাদেশসহ ২২টি দেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে মেজবাহউদ্দীন জানান।

“এর মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি সম্পদশালী দেশও রয়েছে।”

বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব এম আসলাম আলমসহ অর্থমন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আলোচিত এই অবকাঠামো ব্যাংকের সদস্য হওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণা পরিচালক জায়েদ বখত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বর্তমান পেক্ষাপটে আঞ্চলিক সহযোগিতা ছাড়া কোন দেশই এগিয়ে যেতে পারবে না। চায়না এখন বিশ্বের অন্যতম প্রধান শক্তিধর অর্থনৈতিক দেশ।”

“তাদেরে নেতৃত্বে গঠিত ব্যাংকের সদস্য হয়ে বাংলাদেশ লাভবানই হবে বলে আমার মনে।”

এশিয়া অঞ্চলের অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে গত বছর এশিয়া প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন সামিটে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এ ঘোষণা দেন।

চলতি বছরের শেষের দিকে এই ব্যাংকের যাত্রা শুরু হবে বলেওে ঐ সামিটে ঘোষণা দিয়েছিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট।

এশিয়ার বিভিন্ন দেশ ও ইউরোপের সঙ্গে স্থলপথের সংযোগ স্থাপন এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে অর্থায়ন করাই হবে এর প্রধান লক্ষ্য বলে জানিয়েছিলেন শি জিনপিং।

প্রচীন তার পরিকল্পনাটি নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া এবং এমনকি ‘শত্রু প্রতিবেশী’ জাপানের সঙ্গেও আলোচনা করেছে বলে চীনের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।

এশিয়ার অনেক দেশই এতে যোগ দিতে আগ্রহ দেখিয়েছে। তবে কেউ এগিয়ে না এলেও চীন একাই সামনের দিকে যাবে।ইতিমধ্যে চীন ১০টি দেশের সঙ্গে সমঝোতা স্মারকও সই করেছে।

ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে চীন ইতিমধ্যে এডিবির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চায়না সার্বভৌম সম্পদ তহবিলের সাবেক চেয়ারম্যান জিন লিকুনকে নিয়োগ দিয়েছে। তিনি ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছেন।

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) তথ্য অনুযায়ী, এশিয়ার অবকাঠামো খাতে এখন থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রতিবছরে ৮০ হাজার কোটি ডলার করে বিনিয়োগ প্রয়োজন। অথচ সংস্থাটি বছরে মাত্র এক হাজার কোটি ডলার ঋণ দিয়ে থাকে।

এ থেকেই অনুমেয় যে এআইআইবির মতো আরও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার সুযোগ রয়েছে।