প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে অর্থমন্ত্রণালয়ের এই প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।
বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের বলেন, “মোবাইল অপারেটর কর্তৃক সিম বা রিম কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে প্রদত্ত সেবার বিনিময়ে প্রাপ্ত সমুদয় অর্থের ওপর ১ শতাংশ হারে সারচার্জ আরোপের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।”
এ বাবদে বছরে অতিরিক্ত ১৪০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এই অর্থ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে ব্যয় করা হবে।
সুনির্দিষ্ট কোনো খাতে জনগণের কাছ থেকে অর্থ তুলতে সারচার্জ আরোপ করে সরকার। এক সময় যমুনা সেতু তৈরিতে সরকার সারচার্জ আরোপ করেছিল। তখন বাস-ট্রেনের টিকিট, সিনেমার টিকিট কাটার সময় অতিরিক্ত টাকা নেয়া হতো, যা যমুনা সেতুর তহবিলে যেত।
সংসদে দেয়া বক্তৃতায় তিনি বলেন, “মোবাইল ফোনের আমদানির ওপর শুল্ক কিছুটা হ্রাস করতে পারেন। মোবাইল ফোনের ব্যবহারের ওপর সারচার্জ বসাতে পারেন। এ থেকে যে রাজস্ব আসবে সেটা শিক্ষা ও স্বাস্থ খাতের উন্নয়নে ব্যবহার করতে পারি।”
প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব গ্রহণ করে অর্থমন্ত্রী মোবাইল ফোন ব্যবহারের ওপর সারচার্জ আরোপের ঘোষণা দেন এবং অর্থবিলে তা পাস হয়। তবে কী হারে-কীভাবে এটা আদায় করা হবে সে বিষয়ে তখন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
সরকারের ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জাতীয় রাজস্ব বের্ডের ভ্যাট বিভাগ ১ শতাংশ সারচার্জ আরোপের প্রস্তাব রেখে একটি সারসংক্ষেপ অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। মন্ত্রিসভার অনুমোদন পাওয়ায় প্রজ্ঞাপন জারি করে এখন তা কার্যকর করা হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে আলোচনা করে এনবিআরের পর্যালোচনার পর অর্থমন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ মন্ত্রিসভায় এ প্রস্তাব নিয়ে আসে।”
মোশাররাফ হোসাইন বলেন, এনবিআর হিসাব করে দেখিয়েছে, দেশের মোবাইল ব্যবহারকারীরা প্রতি মাসে গড়ে ২০০ টাকা ব্যবহার করেন। এর ১ শতাংশ হিসাবে জনপ্রতি সারচার্জ দাঁড়ায় গড়ে ২ টাকা।
“প্রত্যেক সিম ব্যবহারকারী প্রতি মাসে গড়ে ২ টাকা করে পরিশোধ করবেন। এতে সরকারের খাতায় জমা হবে বছরে ১৪০ কোটি টাকা।”
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির জুলাই মাসের হিসাবে দেশে মোবাইল ফোন সংযোগের সংখ্যা ১১ কোটির বেশি হলেও সব সিম একসঙ্গে কার্যকর থাকে না।
সচিব বলেন, “শুধু ভয়েস কল নয়, সব সেবা মিলিয়েই এটি কার্যকর হবে। ফলে ইনডিভিজুয়াল গ্রাহকের ওপর তেমন কোন চার্জই পড়বে না।”
এ জন্য গ্রাহকের বাড়তি কোনো অর্থ পরিশোধ করতে হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, “গ্রাহকের ওপর সরাসরি চার্জ করা হবে না। এটি শোধ করবে মোবাইল অপারেটররা, এ ব্যাপারে কোনো কনফিউশন থাকার কথা নয়।”