ডিজিটাল ভূমি জরিপে বরাদ্দ বেড়েছে

ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপ প্রকল্পের ব্যয় ৩৮ কোটি টাকা বেড়ে প্রায় ৯৩ কোটি টাকা হয়েছে।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 August 2014, 12:20 PM
Updated : 26 August 2014, 04:33 PM

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সংশোধিত এই প্রকল্পটিসহ তিনটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়।

ডিজিটাল ভূমি জরিপে ২০১২ সালে এই প্রকল্পটি অনুমোদনের সময় ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫৫ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। সেই ব্যয় এবার ৬৬ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৯২কোটি ৭৮ লাখ টাকা।

ব্যয়ের সঙ্গে প্রকল্পের মেয়াদও বেড়েছে দুই বছর। চলতি বছরের জুলাইয়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা ছিল ভূমি মন্ত্রণালয়ের, এখন তা ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত চলবে।

ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপ ও রেকর্ড প্রণয়ন এবং সংরক্ষণ এই প্রকল্পের আওতায় দেশের ৫৫টি জেলার সাড়ে ৪ কোটি ভূমির খতিয়ান তৈরি করা হবে। খতিয়ানের ডাটা এন্ট্রি এবং তা সংরক্ষণ করা হবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে।

এর ফলে ভূমির খতিয়ান সংরক্ষণ এবং ভূমির মালিকদের তা সরবরাহ করা সহজ হবে।

প্রকল্প ব্যয় বাড়ার কারণের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে,মেয়াদ দুই বছর বাড়ায় এর ব্যয়ও বেড়েছে। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় ডেভেলপমেন্ট সফটওয়্যারের ইলেকট্রনিক ল্যান্ড রেকর্ড সিস্টেমের (ইএলআরএস) ওপর প্রতিটি জেলার রেকর্ড রুমের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের জন্য প্রকল্পটি সংশোধন করা হচ্ছে। 

এছাড়া সারাদেশে ইএলআরএস বাস্তবায়ন টিমকে সম্মানীত করা হবে। জাতীয় পর্যায় থেকে ডাটা এন্ট্রি কার্যক্রম মনিটরিং করার জন্য একটি ৪২ ইঞ্চি এলইডি টিভি কেনা হবে।
 
৫৫টি জেলার রেকর্ড রুমে ২ এমবিপিএস ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া হবে। এছাড়া ডাটা এন্ট্রি হার ৬ টাকা থেকে ১৩ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ব্যয় বেড়েছে।

ঢাকা বিভাগের ১৩টি জেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। জেলাগুলো হচ্ছে- ঢাকা, নেত্রকোনা, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, রাজবাড়ী, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, ফরিদপুর ও শরীয়তপুর।
 
চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, নোয়াখালী, চাঁদপুর ও কক্সবাজার জেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
 
এছাড়া সিলেট বিভাগের সিলেট, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।

অন্যদিকে, বরিশাল বিভাগের ভোলা, বরিশাল, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, পিরোজপুর ও বরগুনা জেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।
 
রাজশাহী বিভাগরে সাতটি জেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। এগুলো হচ্ছে- রাজশাহী, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট ও বগুড়া।
 
রংপুর বিভাগের পঞ্চগড়, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর, গাইবান্ধা ও ঠাকুরগাঁও জেলা ভূমি জরিপ পদ্ধতি ডিজিটাল করা হবে।
 
এছাড়া খুলনা বিভাগের বাগেরহাট, নড়াইল, সাতক্ষীরা, খুলনা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও মেহেরপুর জেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।

একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, একনেক সভায় ২৭১ কোটি টাকার তিনটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে ১টি নতুন এবং ২টি সংশোধিত।

সম্পূর্ণ সরকারি অর্থে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হবে বলে জানান তিনি।

সভায় ৫৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে অনুমোদিত অন্য দুটি প্রকল্প হচ্ছে- ৪০ ফুট দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট এয়ার ব্রিদিং ও গ্যাস ফায়ার্ড ফায়ার ফাইটিং ট্রেনিং গ্যালারী এবং ঘাটতি ফায়ার ফাইটিং রেসকিউ সরঞ্জাম সংগ্রহ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর ২০১৬ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

এছাড় সভায় ১২৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকার সাইনবোর্ড-মোড়েলগঞ্জ-রায়েন্দা-শরণখোলা-বগী সড়ককে আঞ্চলিক মহাসড়কে উন্নীতকরণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়।

শেরে বাংলানগরে এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম,প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।