গ্রামবাসীদের জন্য বহুতল আবাস হচ্ছে

গ্রামীণ আবাসন থেকে কৃষি জমি রক্ষার উপায় খুঁজতে পরীক্ষামূলক বহুতল ভবন নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।  

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 August 2014, 01:57 PM
Updated : 19 August 2014, 07:13 PM

সমবায়ভিত্তিক এই সব বহুতল ভবনের নাম হবে পল্লী জনপদ।

প্রাথমিক পর্যায়ে সাত বিভাগে একটি করে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৪২৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকার প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়।

প্রকল্পের কার্যপত্রে বলা হয়েছে, সাত বিভাগের উপজেলাভিত্তিক গ্রোথ সেন্টারের সাতটি এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। একটি বেইজলাইন সার্ভে পরিচালনার মাধ্যমে প্রকল্প এলাকা চূড়ান্ত করা হবে।

প্রস্তাবিত ভবনের নকশা

যে সব গ্রামে কৃষি জমি অপচয় করে গৃহ নির্মাণের প্রবণতা বেশি, যে সব এলাকার লোকজন বিদেশে অবস্থান করে রেমিটেন্স পাঠান, যে এলাকায় প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণের সুযোগ রয়েছে, যে এলাকার মানুষ ৩০ শতাংশ নির্মাণ ব্যয় নির্মাণকালীন অগ্রীম হিসেবে পরিশোধের সক্ষমতা ও যোগ্যতা রাখেন এবং যে এলাকার মানুষের একসঙ্গে একটি ভবনে বসবাসের মানসিকতা আছে- সে সব জনগোষ্ঠী এবং গ্রামকে প্রাথমিকভাবে প্রকল্প এলাকা হিসেবে নির্বাচন করা হবে।

পরে সার্ভের মাধ্যমে প্রাপ্ত উপাত্ত বিশ্লেষণ ও ফলাফলের ভিত্তিতে এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন সংক্রান্ত স্টিয়ারিং কমিটির সিদ্ধান্তের আলোকে প্রকল্প এলাকা চূড়ান্তভাবে নির্বাচন করা হবে।

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে কৃষি জমি অপচয় রোধ করা এই প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য বলে কার্যপত্রে বলা হয়েছে।

জৈব সারের ব্যবহার বৃদ্ধিও এ প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য।

সে কারণেই প্রকল্পটির নাম দেয়া হয়েছে ‘কৃষি জমি অপচয়রোধ এবং জৈব সারের ব্যবহার বৃদ্ধির লক্ষ্যে সমবায়ভিত্তিক বহুতল ভবন ‘পল্লী জনপদ’ নির্মাণ সংক্রান্ত প্রায়োগিক গবেষণা’ প্রকল্প।

পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, সেন্টার ফর ইরিগেশন অ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট এবং পল্লী উন্নয়ন একাডেমী (বগুড়া) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

২০১৭ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক হয়।

এছাড়াও সভায় আরো দুটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। এরমধ্যে একটি হচ্ছে- সম্প্রসারিত তুলা চাষ প্রকল্প (প্রথম পর্যায়)। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৫ কোটি টাকা। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পটিও ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।

প্রস্তাবিত ভবনের নকশা

অপর প্রকল্পটি হচ্ছে- নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে ঢাকার মানিকনগর পর্যন্ত ২৩০ কেভি সঞ্চালন লাইন স্থাপন। সংশোধিত এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০০ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।

সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, একনেক সভায় তিনটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে দুটি নতুন এবং একটি সংশোধিত।

তিনি বলেন, তিন প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে ৮২৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২০ কোটি ৩ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ২২২ কোটি ৪১ লাখ টাকা।

এছাড়া প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর নিজস্ব তহবিল থেকে ৮৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, ডাক, টেলিযোগাযোগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নানসহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।