বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ‘জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ ও প্রতিকার’ কমিটির সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “ইতোমধ্যে ইসলামী ব্যাংক তাদের লভ্যাংশ ব্যয়ের একটি প্রতিবেদন দিয়েছে। সেই প্রতিবেদনে শুভঙ্করের ফাঁকি আছে কিনা- তা যাচাই-বাছাই করতে গোয়েন্দাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।”
ইসলামী ব্যাংকিং পরিচালনাকারী আরো কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও নজরদারি চলছে বলে প্রতিমন্ত্রী জানান।
তিনি বলেন, “জঙ্গিবাদের মূল উৎস হলো অর্থ। এই অর্থের উৎস খুঁজে বের করতে পারলে জঙ্গিবাদ দমন অনেক সহজ হবে।”
জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগ ওঠায় গত কয়েকবছর ধরেই আন্তর্জাতিক চাপে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক। ওই অভিযোগের কারণে এইচএসবিসি যুক্তরাজ্য, সিটি ব্যাংক এনএ, ব্যাংক অব আমেরিকা ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন বন্ধ করে দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট কমিটির এক প্রতিবেদনেও ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে মুদ্রা পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়নের অভিযোগ আসে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, এই ব্যাংকে এমন কিছু অ্যাকাউন্ট হোল্ডার পাওয়া গিয়েছিল, যাদের নাম ছিল জাতিসংঘের সন্দেহের তালিকায়। এসব অ্যাকাউন্টের তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ‘লুকিয়েছিল’ ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
ওই ঘটনার পাশাপাশি ব্যাংকটির আর্থিক ব্যবস্থাপনায় ‘অনিয়ম-দুর্নীতির’ অভিযোগ থাকায় ২০১০ সাল থেকেই ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডে একজন পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিয়ে রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ওই চিঠিতে বলা হয়, “ইসলামী ব্যাংকে ঘটে যাওয়া অনিয়ম-দুর্নীতি সম্পর্কে ইতিপূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংক কিছু তথ্য দিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করেছে। আরো কিছু অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এসেছে।
“এসব ক্ষেত্রে যে অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রয়োজন। আশা করছি, দ্রুত তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবেন।”
ব্যাংকটির মালিকানা কাঠামোয় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে তদন্তাধীন জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
ইসলামী ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান আবু নাসের মোহাম্মদ আব্দুজ জাহের মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রাম এলাকায় আল বদর বাহিনীর নেতা ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
যুদ্ধাপরাধের জন্য বিচারাধীন জামায়াতে ইসলামীর নেতা মীর কাশেম আলী ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান। জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির এই সদস্য ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশনের সদস্য (প্রশাসন)।
ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আব্দুল হান্নানও জামায়াতে ইসলামীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।
ব্যাংকটির সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. সালেহ হলেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে জামায়াতের সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহেরের ভাই।