চট্টগ্রামের উন্নয়নে ৮০০০০ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রতিশ্রুতি

আগামী পাঁচ বছরে চট্টগ্রামের উন্নয়নে ৮০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরকারদলীয় নেতা-কর্মীদের দখলবাজি বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 August 2014, 03:13 PM
Updated : 9 August 2014, 03:13 PM

শনিবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে ১৪ দল চট্টগ্রামের আয়োজনে ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।‍

“আগামী পাঁচ বছরে চট্টগ্রামের উন্নয়নে ব্যয় হবে ৮০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু পরিষ্কার বলে দিচ্ছি, নিয়মানুবর্তিতা না আসলে কোনো বিদেশি বিনিয়োগ আসবে ‍না। আর একবার বিনিয়োগ ফিরে গেলে আড়াইশ’ বছরেও এই উন্নয়ন হবে না।”

আওয়ামী লীগের কিছু-কিছু নেতা-কর্মীর আচরণে ক্ষোভও প্রকাশ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

“ক্ষমতায় আসলে সবাই আওয়ামী লীগ হয়ে যায়। নতুন রাস্তা করলে দখল হয়ে যায়। ফুটপাত সব দখল হয়ে যায়। আপনারা থাকতে আপনাদের বাড়ির সামনের ফুটপাত দখল হয় কী করে?”

“কক্সবাজারে মেরিন ড্রাইভ করেছি। গিয়ে দেখি উদ্বাস্তুরা সব দখল করে ফেলেছে। দখলে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা জড়িত।”

নেতা-কর্মীদের উন্নয়নে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, “কথা দিন ফুটপাত দখলমুক্ত করবেন। রাস্তা দখলমুক্ত রাখবেন। এ ব্যাপারে কথা না দিলে কোনো উন্নয়ন হবে না।”

গভীর সমুদ্র বন্দর স্থাপনে ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশের প্রস্তাব এসেছে জানিয়ে তিনি বলেন, নেদারল্যান্ডস, ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশ প্রস্তাব দিয়েছে। কেউ কেউ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিজেরা রাখতে চেয়েছে।

“এটার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব আমরা (বাংলাদেশ) রাখতে চাই। এ নিয়ে দেন-দরবার চলছে। আশা করি শিগগিরই সিদ্ধান্ত হবে।”

ভবিষ্যত উন্নয়ন প্রকল্প সম্পর্কে মন্ত্রী জানান, আনোয়ারায় ৬ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মাতারবাড়িতে ৪৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও কয়লা আনার জন্য জেটি নির্মাণ, আনোয়ারা থেকে বিদ্যু‍ৎ সঞ্চালন লাইন এবং ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে মহেশখালীতে এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী নবম সংসদ নির্বাচনের আগে চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব নিজে নিয়েছিলেন।

“তিনি কথা রেখেছেন এবং সিডিএ’র মাধ্যমে চট্টগ্রামের সব সড়ক প্রশস্ত করেছেন। চট্টগ্রামে সমুদ্র তীরে একটি আউটার রিং রোডের প্রস্তাব করেছি। এটি হয়ে গেলে সমুদ্র তীরে পর্যটন ও বিনোদনের জন্য উন্নয়ন করব।”

জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ‍অর্থায়নে চট্টগ্রামে একটি ‘মাইলস্টোন’ আবাসিক প্রকল্প করা হবে বলেও জানান মোশাররফ।

“চট্টগ্রাম বিমান বন্দর থেকে বারিক বিল্ডিং হয়ে শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত একটি ফ্লাইওভার করার প্রস্তাব দিয়েছে চীনা প্রতিষ্ঠান। এটি নিয়ে আলোচনা চলছে।”

অনুষ্ঠানে নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের পক্ষে সমন্বিতভাবে একটি উন্নয়ন প্রস্তাবনা পাঠ করেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসক ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম।

নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাসদের কার্যকরী সভাপতি ও সাংসদ মাঈনুদ্দিন খান বাদল।

নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ আবু রেজা মো. নেজাম উদ্দিন নদভী, উত্তর জেলার সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলার সভাপতি মোসলেম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, জাসদ নেতা ইন্দু নন্দন দত্ত প্রমুখ।