বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কাজী ছাইদুর রহমান এই তথ্য জানিয়ে বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স এবং রপ্তানি আয়ের ইতিবাচক ধারার কারণে এই মাইলফলক অর্জিত হয়েছে।
বিদেশি সাহায্য (ফরেন এইড) বৃদ্ধিও রিজার্ভ বাড়ায় অবদান রেখেছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই মাসে ১৪৮ কোটি ২৪ লাখ ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা; যা এক মাসের হিসাবে অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি।
আর গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি থেকে বাংলাদেশ আয় করেছে ৩ হাজার ১৮ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ১২ শতাংশ বেশি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, মঙ্গলবার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২১ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলার। বৃহস্পতিবার দিন শেষে তা বেড়ে ২২ দশমিক ০৫ বিলিয়ন ডলারে পোঁছেছে।
এই রিজার্ভ দিয়ে প্রায় সাত মাসের আমদানি দায় মেটানো সম্ভব বলে জানান ছাইদুর রহমান।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারতের রিজার্ভ স্থিতি ৩০০ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। পাকিস্তানের ১০ বিলিয়ন ডলার।
গত ১০ এপ্রিল বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে। চার মাসের ব্যবধানে তা আরো দুই বিলিয়ন ডলার বেড়ে ২২ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করলো।
ছাইদুর রহমান বলেন, “আমদানি বাড়ার পরও মূলত রপ্তানি আয় এবং প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের ওপর ভর করে রিজার্ভ এই মাইলফলক অতিক্রম করেছে।”
আকুর পরবর্তী আমদানি বিল সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে পরিশোধ করতে হবে। তার আগ পর্যন্ত রিজার্ভ ২২ বিলিয়ন ডলারের ওপরে থাকবে বলে আশা করছেন তিনি।
প্রতি দুই মাস অন্তর আকুর বিল পরিশোধ করে বাংলাদেশ। মে-জুন মেয়াদের বিল শোধ করা হয়েছে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে। জুলাই-আগস্ট মেয়াদের বিল শোধ করা হবে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০০৯ সালের ১০ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১০ বিলিয়ন ডলার। ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে তা ১৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে। চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি রিজার্ভ ১৯ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়।
ডলার কিনেই চলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
এদিকে বাজার থেকে ডলার কেনা অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৃহস্পতিবারও ডলার কেনা হয়েছে।
এ নিয়ে চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৭ জুলাই পর্যন্ত (১ জুলাই থেকে ৭ অগাস্ট) ২৭ কোটি ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৫১৫ কোটি ডলার কেনা হয়। ২০১২-১৩ অর্থবছরের কেনা হয়েছিল ৪৭৯ কোটি ডলার।
ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতেই বাজার থেকে ডলার কেনা হচ্ছে বলে জানান ছাইদুর রহমান।