আরো একটি বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে ঘোড়াশালে

দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে নতুন একটি বড় প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 April 2014, 02:02 PM
Updated : 8 April 2014, 02:19 PM

৩৬৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কম্বাইন্ড সাইকেলের এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ঘোড়াশালে স্থাপন করা হবে।

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে দুই হাজার ৫১২ কোটি টাকার এই প্রকল্পসহ মোট দুই হাজার ৭৯৩ কোটি টাকার চারটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়।

এই প্রকল্পের জন্য ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংক অব চায়না ঋণ হিসেবে এক হাজার ৬৫৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা দেবে।

আর সরকার দেবে ৭৪৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা। বাকি ১১৩ কোটি ৭৩ লাখ টাকা বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড নিজস্ব তহবিল দেবে জোগান দেবে।

‘কনস্ট্রকশন অব ঘোড়াশাল ৩৬৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট’ প্রকল্পের কার‌্যপত্রে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের জুনের মধ্যে নরসিংদীর ঘোড়াশালে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপনের কাজ শেষ হবে। এই কেন্দ্রে কাঁচামাল হিসেবে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহৃত হবে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

কেন্দ্রটি চালু হলে ৩৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়ে বিদ্যুতের বর্ধিত চাহিদা মিটিয়ে লোড শেডিং হ্রাস করবে বলে কার‌্যপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

কম্বাইন্ড সাইকেল প্রক্রিয়ায় একইসঙ্গে গ্যাস টারবাইন ও বাষ্পীয় টারবাইন ব্যবহার করা হয়। প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে গ্যাস টারবাইন। আর এই টারবাইনের সৃষ্ট তাপ ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে বাষ্পীয় টারবাইন।

উচ্ছিষ্ট তাপকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি করায় এই প্রক্রিয়াকে অত্যন্ত কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

 

অটিস্টিক একাডেমি

সভায় অটিস্টিক শিশুদের মূলধারার শিক্ষা ব্যবস্থায় নিয়ে আসতে ‘অটিস্টিক একাডেমি স্থাপন’ নামে অন্য একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। রাজধানীতে ৫৪ কোটি ১১ লাখ টাকা ব্যয়ে এই একাডেমি নির্মাণ করা হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর সম্পূর্ণ সরকারি অর্থে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

২০১৬ সালের ডিসেম্বর নাগাদ এই প্রকল্পটির কাজ শেষ হবে বলে সভায় জানানো হয়।

আধুনিক নার্স প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট

বিশ্বব্যাপী নার্সিং পেশার চাহিদার কারণে নার্সিং শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও দক্ষ নার্স তৈরির মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম আরো উন্নত করার লক্ষ্যে ১২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘আধুনিক নার্স প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট স্থাপন’ প্রকল্পটিও একনেকের বৈঠকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

কোরীয় উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা কোইকা এ প্রকল্পে ১১৩ কোটি টাকা দেবে। বাকি অর্থ সরকার যোগান দেবে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নার্সিং সেবা পরিদপ্তর এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

ঢাকার মুগদায় এই প্রতিষ্ঠানটি স্থাপন করা হবে। ২০১৮ সালের জুন নাগাদ এই প্রকল্পটি সম্পন্ন হবে পরিকল্পনা কমিশনের কার‌্যপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ভবন

সভায় দেশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত কার্যক্রমকে সম্প্রসারণের জন্য স্থায়ী অবকাঠামো হিসেবে ‘জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ভবন নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পটিও অনুমোদন দেয়া হয়।

৯৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পটি সম্পূর্ণ সরকারি অর্থে বাস্তবায়ন করা হবে।

২০১৬ সালের জুন মাসে এ প্রকল্পটির কাজ শেষ হবে। জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর এবং গণপূর্ত অধিদপ্তর যৌথভাবে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

সভাশেষে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত ও অবকাঠামো বিভাগের সদস্য হেদায়েতুল্লা আল মামুন সংবাদ সম্মেলনে অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর বিভিন্ন দিক ব্যাখ্যা করেন।

রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, ও স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনসহ একনেকের অন্যান্য সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।