মূল্যস্ফীতিতে লক্ষ্য পূরণ হবে: বিবিএস

চলতি অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি বাজেটে ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে নেমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মহাপরিচালক গোলাম মোস্তফা কামাল।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 April 2014, 08:41 AM
Updated : 6 April 2014, 08:41 AM

রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “গত তিন মাস ধরে মূল্যস্ফীতির হার ক্রমান্বয়ে কমে আসছে। অর্থ্যাৎ মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির মাত্রাটা সামান্য। অর্থবছরের বাকি তিন মাসে এই বৃদ্ধির হার আরো কমবে। এ অবস্থায় আমরা প্রত্যাশা করছি বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামিয়ে আনার যে টার্গেট ধরা হয়েছিল সেটা সম্ভব হবে।”

পরিসংখ্যান দিয়ে মোস্তফা কামাল বলেন, “অর্থবছরের নয় মাসের হিসাবে (মার্চ পর‌্যন্ত) গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ। এপ্রিল, মে ও জুন- এই তিন মাসে কমলে অর্থবছর শেষে তা ৭ শতাংশে নেমে আসবে।”

চলতি ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

এই অর্থবছরের আর তিন মাস বাকি আছে। এরইমধ্যে আগামী ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে।

৫ জুন জাতীয় সংসদে বর্তমান সরকারের প্রথম এবং নিজর অষ্টম বাজেট পেশ করছেন অর্থমন্ত্রী।

মার্চে মূল্যস্ফীতি ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ

নতুন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর তৃতীয়  মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি সামান্য বেড়েছে। পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে মার্চে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ।

ফেব্রুয়ারিতে এ হার ছিল ৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ।বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ।

খাদ্য খাতে  মূল্যস্ফীতি  ফেব্রুয়ারির ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ থেকে বেড়ে মার্চে ৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ হয়েছে।

তবে এই সময়ে খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ২৬ শতাংশে নেমে এসেছে।

মার্চে মূল্যস্ফীতির কারণ ব্যাখ্যা করে গোলাম মোস্তফা বলেন, “চাল, ডাল, আটা, শাক-সবজি, ফল, মসলা, তেল, দুধ এবং অন্যান্য খাবারের দাম বাড়ার কারণে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে।”

অন্যদিকে পরিধেয় বস্ত্র, বাড়ি ভাড়া, আসবাবপত্র ও গৃহস্থালী, চিকিৎসা সেবা, পরিবহন, শিক্ষা উপকরণ এবং অন্যান্য দ্রব্য ও সেবার দাম বাড়ার কারণে খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে।”

জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে যে ক্ষতি হয়েছিল-ব্যবসায়ীরা তা পুষিয়ে নেয়ার কারণেও মূল্যস্ফীতি হয়েছে বলে জানান বিবিএস মহাপরিচালক।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, “রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে মূল্যস্ফীতির একটি ঊর্ধ্বমুখী একটা ধারা ছিল। কিন্ত গত কয়েক মাস ধরে সেটা নিম্মমুখী। এখন আগের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ব্যবসায়ীরা একটু বেশি মুনাফা করতে পারে।”

সংবাদ সম্মেলনে জাননো হয়, গত এক বছরে (২০১৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৪ সালের মার্চ পর্যন্ত) গড় মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ২০১২ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৩ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ে যা ৬ দশমিক ২৩ শতাংশ ছিল।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংসখ্যান  ভবনে মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ এ তথ্য প্রকাশ উপলক্ষে সংবাদ সম্মলনের আয়োজন করা হয়।

গত বছর অগাস্ট মাস থেকে ২০০৫-০৬ অর্থবছরকে ভিত্তিবছর ধরে মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করছে পরিসংখ্যান ব্যুরো। এর আগে প্রায় এক বছর ১৯৯৫-৯৬ এবং ২০০৫-০৬ দুই ভিত্তিবছরের হিসাবেই মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করা হতো।

তার আগে দীর্ঘদিন ১৯৯৫-৯৬ বছরকে ভিত্তি বছর ধরে মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করা হত।