কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, সদ্য শেষ হওয়া মার্চ মাসে ১২৭ কোটি ৩৩ লাখ ডলার রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা এ যাবতকালে দেশে আসা তৃতীয় সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কাজী ছাইদুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বুধবার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১৯ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলার, যা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি।
“রপ্তানি আয় এবং রেমিটেন্সের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি বিল পরিশোধের আগে রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলার (২ হাজার কোটি টাকা) ছাড়িয়ে যাবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।”
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ১৯ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। পরে ৫ মার্চ আকুর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মেয়াদের ৯৬ কোটি ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর তা ১৯ বিলিয়ন ডলারের নীচে নেমে আসে।
রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্স বাড়ায় ১৯ মার্চ রিজার্ভ আবারো ১৯ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়।
প্রতি দুই মাস পর পর আকুর আমদানি বিল পরিশোধ করতে হয়। মার্চ-এপ্রিল মেয়াদের আমদানি বিল মে মাসের প্রথম সপ্তাহে শোধ করতে হবে।
এই বিল পরিশোধের আগে রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলকে পৌঁছাবে বলে ধারণা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তা ছাইদুর রহমানের।
খাদ্য আমদানি না হওয়াই রিজার্ভ বাড়াতে অবদান রেখেছে বলে মনে করেন তিনি।
২০০৯ সালের ১০ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১০ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের ৭ মে তা ১৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়।
আর গত ১৯ ডিসেম্বর প্রথমবারের মত বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয় ১৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের হাতে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো বিদেশি মুদ্রার মজুদ থাকতে হয়।
ছাইদুর রহমান জানান, গত মাসে প্রবাসীরা ১২৭ কোটি ৩৩ লাখ ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন, যা ফেব্রুয়ারি মাসের চেয়ে ৮ এবং গত বছরের মার্চ মাসের চেয়ে প্রায় ৪ শতাংশ বেশি।
ফেব্রুয়ারি মাসে ১১৬ কোটি ৪০ লাখ ডলারের রেমিটেন্স দেশে এসেছিল। গত বছরের মার্চে এসেছিল ১২২ কোটি ৯৩ লাখ ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রেমিটেন্স সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স এসেছিল ২০১২ সালের অক্টোবর মাসে, ১৪৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিটেন্স এসেছিল ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে, ১৩২ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
তবে চলতি ২০১৩-১৪ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ কম রেমিটেন্স এসেছে।
গত কয়েক মাসে রেমিটেন্স বাড়ার কারণ ব্যাখ্যা করে ছাইদুর রহমান বলেন, “আমাদের প্রধান শ্রম বাজার সৌদি আরবে আকামা পরিবর্তনের (চাকরি পরিবর্তন বা নবায়ন) ফলে প্রবাসীদের অর্থ ব্যয় হওয়ায় চলতি অর্থবছরের প্রথম দিকে প্রবাসীরা কম অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন। এখন আর তাদের এ জন্য কোনো অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে না।”