সোমবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী বলেন, রিজার্ভ ভেঙে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে বলে গণমাধ্যমে যেসব খবর প্রকাশিত হচ্ছে তা ঠিক নয়। কোনো অবস্থাতেই রিজার্ভ ভেঙে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে না।
“আমরা যেভাবে জ্বালানি তেল, সার ও গম আমদানির ক্ষেত্রে এলসি খোলার জন্য বৈদেশিক মুদ্রার সংস্থান করি, সেভাবেই এই সেতু নির্মাণে অর্থের জোগান দেয়া হবে।”
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য প্রতি বছরই বাজেটে একটি বরাদ্দ দেয়া হবে। পাঁচ বছর ধরে ওই বরাদ্দ দেয়া হবে। প্রথম বছর শুধু জাজিরা পয়েন্টে নদী শাসনের কাজ হওয়ায় বেশি খরচ হয়নি। বড় বড় কনস্ট্রাকশনের কিছু হয়নি এখনো।
পদ্মা সেতু নির্মাণে যে ডলার লাগবে, তা জোগানোর আশ্বাস কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেয়ার পর বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, এতে রিজার্ভে চাপ পড়বে এবং তার ফল হিসেবে অর্থনীতিতে বিপর্যয় দেখা দিতে পারে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী বলেন, “পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য যে বিদেশি মুদ্রার প্রয়োজন হবে সেটা বাজেটে বরাদ্দকৃত টাকা দিয়ে বাজার থেকে কেনা হবে। এর পরেও যদি ডলারের প্রয়োজন হয় সেটাও আমরা (সরকার) টাকা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কিনবে।
“কোনো অবস্থাতেই রিজার্ভ ভেঙে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে না।”
মুহিত বলেন, “রিজার্ভ খাওয়ার জন্য না। প্রয়োজন হলে সরকার টাকা দিয়ে রিজার্ভ থেকে ডলার কিনে পদ্মায় ব্যবহার করবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে বিদেশি কেনাকাটার এলসি খুলতে সরকার অগ্রণী ব্যাংকে একটি হিসাব খুলেছে। সরকার টাকা দিলে অগ্রণী ব্যাংক সেই টাকায় ডলার কিনে এলসি খুলবে।
“এক্ষেত্রে অগ্রণী ব্যাংক তার নিজের কাছে সংগৃহীত ডলার এবং প্রয়োজনে বাজার থেকে ডলার সংগ্রহ করবে। এরপরেও যদি ডলারের প্রয়োজন হয় তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে টাকা দিয়ে ডলার কিনে এলসি খুলবে।”
পদ্মা সেতু নির্মাণে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২৯১ কোটি ডলার। নির্মাণে বিদেশি কেনাকাটায় দুইশ’ কোটি ডলারের মতো প্রয়োজন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের ১২০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর তা নিয়ে দ্বন্দ্বের এক পর্যায়ে সরকার তাদের অর্থ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে সরকার নিজস্ব অর্থায়নেই এই সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেয়।