ঢাকায় পানি সরবরাহ বাড়াতে ‘বড়’ প্রকল্প অনুমোদিত

রাজধানীবাসীর জন্য পানি সরবরাহ বাড়াতে পাঁচ হাজার ২৪৮ কোটি টাকার একটি বড় প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Sept 2013, 01:24 PM
Updated : 19 Sept 2013, 01:32 PM

বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়।

বৈঠক শেষে পরিকল্পনা সচিব ভূইয়া শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “ঢাকা মহানগরীতে চাহিদামাফিক বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের লক্ষ্যে এই প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে।”

‘ঢাকা এনভায়রনমেন্টালি সাসটেইন্যাবল ওয়াটার সাপ্লাই’ নামের এই প্রকল্পের কার‌্যপত্রে বলা হয়েছে, প্রকল্পের আওতায় নারায়ণগঞ্জের গন্ধবপুর এলাকায় ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন করা হবে। পাইপ লাইনের মাধ্যমে মেঘনা নদী থেকে পানি এনে এই প্লান্টে পরিশোধন করে ঢাকায় সরবরাহ করা হবে। এই প্লান্টে প্রতিদিন ৫০ কোটি লিটার (৫০০ এমএলডি) পানি পরিশোধন করা যাবে।

প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে পুরান ঢাকা, মতিঝিল, পল্টন, ফকিরাপুল, উত্তরা, গুলশান, বনানী, নিকুঞ্জ, খিলক্ষেত, বাড্ডা ও মিরপুর এলাকায় পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রকল্প বাস্তবায়নে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), ফ্রেঞ্চ ডেভলপমেন্ট এজেন্সি (এএফডি) ও ইউরোপীয় ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (ইআইবি) কাছ থেকে তিন হাজার ৪৯৯ কোটি টাকার ঋণ সহায়তা পাওয়া যাবে।

বাকি অর্থ সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে যোগান দেয়া হবে বলে কার্যপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

বৈঠকে ‘প্রাথমিক শিক্ষা উপবৃত্তি (২য় পর্যায়)’ প্রকল্পের তৃতীয় সংশোধনী অনুমোদন করা হয়, যাতে প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা। এর অধীনে দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দরিদ্র শিক্ষার্থীর প্রত্যেককে মাসিক ১০০ টাকা হারে উপবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে।

প্রকল্পের আওতায় প্রতিমাসে (জুলাই ২০০৮ থেকে ডিসেম্বর ২০০৯ মেয়াদে) ৪৮ লাখ ১৫ হাজার ৬৩৬ জনকে ও জানুয়ারি ২০১০ থেকে জুন ২০১৩ মেয়াদে ৭৮ লাখ ১৭ হাজার ৯৭৭ জনক উপবৃত্তি প্রদান করা হয়েছে।

বর্ধিত মেয়াদে অর্থাৎ জুলাই ২০১৩ থেকে জুন ২০১৫ মেয়াদে প্রতি মাসে ৭৮ লাখ ৭০ হাজার ১২৯ জন শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি প্রদান করা হবে।

সভায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকার, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীসহ অন্যান্য মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সচিব এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।

ভূইয়া শফিকুল ইসলাম বলেন, সভায় অনুমোদিত মোট ১১টি প্রকল্প বাস্তবায়নে ১৬ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে, যার মধ্যে নয় হাজার ৮৫১ কোটি টাকা যোগান দেবে সরকার। বাকি ছয় হাজার ৪১৪ কোটি টাকা প্রকল্প সাহায্য থেকে মেটানো হবে। 

সভায় অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হল- পঙ্গু হাসাপাতালের সম্প্রসারণ ও পুনর্বাসন  (৩৩৬ কোটি টাকা), খামার পর্যায়ে উন্নত পানি ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তির মাধ্যমে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি (৩৫ কোটি টাকা), বক্‌শীগঞ্জ-বালুগাঁও-দেওয়ানগঞ্জ সড়কে ৪টি সেতু নির্মাণ (৫৩ কোটি টাকা), স্থানীয় সরকার বিভাগের সিলেট ও বরিশাল মহানগরীতে পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন ও ড্রেনেজ (২৮২ কোটি টাকা), ৪টি টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট স্থাপন (প্রথম সংশোধন, ২২৭ কোটি টাকা), মেঘনাঘাট-আমিনবাজার ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন (প্রথম সংশোধিত, ৫৯৭ কোটি টাকা), ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির (ডিপিডিসি) উত্তর ও দক্ষিণ জোনের বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন (৫১১ কোটি টাকা টাকা), সেন্টার জোন পাওয়ার ড্রিস্ট্রিবিউশন প্রকল্প (১৪৩৯ কোটি টাকা) এবং ডিপিডিসি’র ১৩২/৩৩ কেভি এবং ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প (১৮৫১ কোটি টাকা)।