ব্যাংকের পুঁজিবাজার বিনিয়োগে নজর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের

পুঁজিবাজারে অতিরিক্ত বিনিয়োগকারী ব্যাংকগুলোকে তাদের বিনিয়োগ ২০১৬ সালের ২১ জুলাইয়ের মধ্যে সীমার মধ্যে নামিয়ে আনতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Sept 2013, 04:37 PM
Updated : 16 Sept 2013, 06:07 PM

সোমবার পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ সংক্রান্ত নীতিমালা বিষয়ক এক সার্কুলারে বাংলাদেশ ব্যাংক পুঁজিবাজারে বিনিয়োগর মাসিক তথ্য চেয়েছে ব্যাংকগুলোর কাছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, “ব্যাংকগুলোকে তাদের প্রতি মাসের শেষ কার‌্যদিবস ভিত্তিক পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিবরণী পরবর্তী মাসের ১০ তারিখের মধ্যে নির্ধারিত ছকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অফ-সাইট সুপারভিশন বিভাগে দাখিল করতে হবে।”

‘ব্যাংক কোম্পানি কর্তৃক পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ সংক্রান্ত নীতিমালা’- শীর্ষক সার্কুলারে বলা হয়েছে, “ব্যাংক কোম্পানি আইন(সংশোধিত)২০১৩ অনুযায়ী কোনো ব্যাংক তার আদায়কৃত মূলধন, শেয়ার প্রিমিয়ামে রক্ষিত স্থিতি, সংবিধিবদ্ধ সঞ্চিতি ও রিটেইন্ড আর্নিংসের ২৫ শতাংশের বেশি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারবে না। যেসব ব্যাংকের এর বেশি বিনিয়োগ রয়েছে তাদেরকে ২০১৬ সালের ২১ জুলাইয়ের মধ্যে বিনিয়োগ কমিয়ে নির্ধারিত সীমার মধ্যে নামিয়ে আনতে হবে।”

সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো সার্কুলারে বলা হয়, ব্রোকারেজ হাউস বা ব্যাংকিং কার্যক্রমের উদ্দেশ্যে গঠিত নিজস্ব সাবসিডিয়ারি কোম্পানি বা এরূপ অন্য কোনো কোম্পানিকে বা কোনো স্টক ডিলারকে ঋণ সুবিধা দেয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যাংকিং নিয়ম-কানুন পরিচালনা করতে হবে।

এছাড়া একক ঋণ গ্রহীতার সর্বোচ্চ সীমার বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।

সার্কুলারে আরো বলা হয়েছে, পুঁজিবাজারে মোট বিনিয়োগের হিসাবায়নের ক্ষেত্রে ব্যাংকের ধারণকরা সকল শেয়ার, ডিবেঞ্চার, কর্পোরেট বন্ড, মিউচুয়্যাল ফান্ড ইউনিট এবং অন্যান্য পুঁজিবাজার নিদর্শনপত্রের বাজারমূল্য অন্তর্ভুক্ত হবে।

একইসঙ্গে হিসাবায়নে সাবসিডিয়ারি কোম্পানিকে দেয়া ঋণের স্থিতি (তলবী ও মেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে) ও মঞ্জুরিকৃত ঋণসীমা (চলমান ঋণের ক্ষেত্রে), পুঁজিবাজার কার্যক্রমে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নিয়োজিত অপর কোনো কোম্পানি অথবা কোনো স্টক ডিলারকে প্রদত্ত্ব ঋণের স্থিতি ও মঞ্জুরিকৃত ঋণসীমা এবং তাদের রক্ষিত তহবিলের স্থিতি (প্লেসমেন্ট) যোগ করতে হবে। 

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে নিবন্ধন পাওয়া কোনো স্টক ডিলারকে শেয়ার বা ডিবেঞ্চারের বিপরীতে দেয়া ঋণ এবং পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে গঠিত কোনো প্রকার তহবিলে প্রদত্ত চাঁদা হিসাবায়নে অন্তর্ভুক্ত হবে।

তবে শেয়ার ডিবেঞ্চার ক্রয় বিক্রয়ের উদ্দেশে কোনো স্টক ডিলারকে স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত শেয়ারের বিপরীতে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে এ ও বি গ্রুপভুক্ত শেয়ারের অনুকূলে বিগত ছয় মাসের বাজার মূল্যের সর্বাধিক ৭০ শতাংশ এবং ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ প্রদান করা যাবে, যার সর্বোচ্চ সীমা হবে ৩ কোটি টাকা।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ নির্ণয়ে যেসব উপাদান অন্তর্ভুক্ত হবে না তাও উল্লেখ করা হয়েছে সার্কুলারে।

এসব উপাদানের মধ্যে রয়েছে, সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুসারে সহজে বিনিময়যোগ্য সম্পদ সংরক্ষণে ব্যবহার উপযোগী অনুমোদিত সম্পত্তির নিদর্শনপত্র, বিশেষ উদ্দেশ্যে গঠিত এবং স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত নয় এমন সরকারি খাতের প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বা ডিবেঞ্চার, তফসিলি ব্যাংকের ইস্যুকৃত টাইয়ার-২ মূলধনে বিবেচনাযোগ্য এবং স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত নয় এরূপ সাব-ডেট ইন্সট্র–মেন্ট (বন্ড বা বিল) এবং সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি (বিডি) ও স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর শেয়ার।