ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার বিক্রি করতে চায় কুয়েতি প্রতিষ্ঠান

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের মালিকানায় অংশীদার কুয়েতের তিনটি প্রতিষ্ঠান নিজেদের শেয়ার বিক্রি করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

রিয়াজুল বাশার. জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2013, 09:09 AM
Updated : 25 March 2013, 07:33 AM

যুদ্ধাপরাধী ব্যক্তি ও সংগঠনের পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগে গণজাগরণ মঞ্চ থেকে ব্যাংকটি বর্জনের আহ্বানের মধ্যেই এ ঘটনা ঘটল।

উদ্যোক্তা হিসেবে ব্যাংকটির ১৫ শতাংশ শেয়ারধারী এই তিন প্রতিষ্ঠান শেয়ার বিক্রির প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে একটি চিঠি দিয়েছে।

এবিষয়ে জানতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) চিঠি পাঠায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

চিঠির উত্তরে বিএসইসি জানিয়েছে, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে শেয়ার বিক্রিতে কোনো বাধা নেই; যে চিঠির অনুলিপি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের হাতে রয়েছে।

কুয়েতের পাবলিক ইন্সটিটিউট অব সোশ্যাল সিকিউরিটি, কুয়েত আওকাফ পাবলিক ফাউন্ডেশন এবং কুয়েত ফাইন্যান্স হাউজ তাদের শেয়ার বিক্রি করতে চাচ্ছে।

তিন প্রতিষ্ঠানের কাছে ইসলামী ব্যাংকের ২০ কোটি ৪ লাখ ৩৩ হাজার ২২৫টি শেয়ার রয়েছে, রোববারের বাজারমূল্যে যার দাম প্রায় ৮৬১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।

৩০ বছরের পুরনো ইসলামী ব্যাংকের মোট শেয়ারসংখ্যা ১২৫ কোটি ৯ লাখ ৬৪ হাজার।

ইসলামী ব্যাংকের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, তাদের বিদেশি অংশীদারদের হাতে বর্তমানে প্রায় ৫৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠির উত্তরে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল ইসলাম লিখেছেন, “তারা বিএসইসির নোটিফিকেশনগুলো মেনে স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে তাদের শেয়ার বিক্রি করতে পারবেন। এ বিষয়ে বিক্রেতাদের স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেয়া যেতে পারে।” 

২৮ ফেব্রুয়ারি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে লেখা বিএসইসির ওই চিঠিতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের ঠিকানাও সংযুক্ত করে দেয়া হয়েছে। তবে রোববার পর্যন্ত ওই প্রতিষ্ঠানগুলো শেয়ার বিক্রির কোনো ঘোষণা দেয়নি।

পুঁজিবাজারে উদ্যোক্তাদের শেয়ার বিক্রি করতে হলে একমাস আগে তার ঘোষণা দেয়া বাধ্যতামূলক। 

তবে শেয়ার বিক্রির বিষয়ে তিন প্রতিষ্ঠান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিলেও যে ব্যাংকের শেয়ার তারা বিক্রি করতে চান সেই ইসলামী ব্যাংক এবিষয়টি না জানার কথা জানিয়েছে।

ব্যাংকটির মুখপাত্র আতাউর রহমান রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ ধরনের কোনো খবর আমাদের জানা নেই। পরিচালকদের শেয়ার বিক্রি করতে হলে পরিচালনা পর্ষদের সভায় অনুমোদন লাগে। এ ধরনের কোনো বিষয় আমাদের কাছে আসেনি।”

ফেব্রুয়ারি মাসে গণজাগরণ মঞ্চ থেকে যুদ্ধাপরাধী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের তালিকায় নাম আসার পর বড় ধরনের সঙ্কটে পড়ে ইসলামী ব্যাংক। 

বিভিন্ন শাখার গ্রাহকদের টাকা তোলার হিড়িক, বিভিন্ন স্থানে হামলার মুখে পড়ার পর আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও এই ব্যাংকের এলসি নিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

ওই পরিস্থিতিতে অস্তিত্ব রক্ষায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাহায্য চায় ইসলামী ব্যাংক, জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগ যার ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকেরও নজর রয়েছে।

ইসলামী ব্যাংকের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরদারি আগে থেকেই ছিল। ২০১০ সাল থেকেই এই ব্যাংকে একজন পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়।