পুকুর-খাল খননে ১৩৩৫ কোটি টাকা

বেকার যুবকদের মৎস চাষের পাশাপাশি নানা আয়বর্ধক কাজের সুযোগ করে দিতে আড়াই হাজারের বেশি খাল ও পুকুর পুনঃখনন করবে সরকার। এতে ব্যয় হবে এক হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 August 2017, 02:51 PM
Updated : 29 August 2017, 07:59 PM

‘সারাদেশে পুকুর-খাল উন্নয়ন’ শীর্ষক এ প্রকল্পের মাধ্যমে আট বিভাগের ৫৬টি জেলার ৪০০ উপজেলার খাস জমিতে থাকা ৯২১টি খাল এবং এক হাজার ৬১১টি পুকুর পুনঃখনন করা হবে।

প্রকল্পটি মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) অনুমোদন পেয়েছে।

শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেকের বৈঠকে এটিসহ ১০ হাজার ৩৩১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ের মোট নয়টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।

এসব প্রকল্পে নিজস্ব তহবিল থেকে ১০ হাজার ৩২২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা এবং ৯ কোটি ৯ লাখ টাকা সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে যোগান দেওয়া হবে।

বৈঠকের পর প্রকল্পগুলোর বিস্তারিত সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান।

পুকুর ও খাল পুনঃখনন প্রকল্পের বিষয়ে তিনি বলেন, “বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময় নিবিড় পরীবিক্ষণ করার নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময় নয়-ছয় হওয়ার আশংকা রয়েছে। তাই প্রকল্পটি নিবিড় পরীবিক্ষণে রাখতে হবে।”

প্রতিমন্ত্রী জানান, এ প্রকল্পটির জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর মাঠ পর্যায় থেকে পুকুর-দিঘি-খালের প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করে।

পরে এলজিইডির ইন্টিগ্রেটেড ওয়াটার রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের (আইডাব্লিউআরএমইউ) মাধ্যমে সরেজমিনে যাচাইবাছাই করে খাল, দিঘি ও পুকুরের জেলাভিত্তিক তালিকা করা হয়। মাঠ পর্যায়ের জরিপে সারাদেশে মোট ১৪ হাজার ৯১০টি খাস পুকুর-দিঘি, ৩৪৯৩টি প্রাতিষ্ঠানিক পুকুর-দিঘি এবং ৬ হাজার ৫৩৬টি খাস খালের তথ্য পাওয়া যায়।

এর মধ্যে থেকে ৫৬ জেলায় ৯২১টি খাস খাল পুনঃখনন (২৩৭২ কি.মি.) ও ১৬১১টি প্রাতিষ্ঠানিক পুকুর-দিঘি (১৭০২ একর) পুনঃখননের জন্য প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। পুকুর-দিঘি ও খাল উন্নয়নের মাধ্যমে ভূ-উপরিস্থ পানি সংরক্ষণ এবং তা বিভিন্ন আয়বর্ধক কার্যক্রমে ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রামীণ বেকার ও দরিদ্র্য জনগোষ্ঠীর জন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে প্রকল্পটি নেওয়া হয়।

একইসাথে ভূ-উপরিস্থ পানির প্রাপ্যতা বৃদ্ধি, পানি নিস্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং বৃক্ষ রোপণের মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য আনাও এ প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য বলে জানান অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী।

অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো

একনেকের বৈঠকে যেসব প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয় তার মধ্যে ‘প্রাথমিক শিক্ষার জন্য উপবৃত্তি প্রকল্প ৩য় পর্যায় প্রকল্পের’ ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৯২৩ কোটি টাকা।

‘৬৪টি জেলায় সমাজসেবা কমপ্লেক্স নির্মাণ (১ম পর্যায়ে ২২ জেলা) প্রকল্পের’ ব্যয় ৩২৯ কোটি ২২ লাখ টাকা।

৯৬২ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে ‘ফেনী-নোয়াখালী জাতীয় মহাসড়কের বেগমগঞ্জ থেকে সোনাপুর পর্যন্ত ৪-লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পে’।

‘নলকা-সিরাজগঞ্জ-সয়দাবাদ আঞ্চলিক মহাসড়কের সিরাজগঞ্জ শহর অংশ (শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হতে কাটা ওয়াপদা মোড় পর্যন্ত) ৪-লেনে উন্নীতকরণ ও অবশিষ্ট অংশ ২-লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পে’ ব্যয় হবে ২৬৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা।

এছাড়া ১১৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘বাংলাদেশ-মায়ানমার মৈত্রী সড়ক (বালুখালী-ঘুনধুম) বর্ডার রোড নির্মাণ প্রকল্প (১ম সংশোধিত)’, ১০৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকায় ‘কুষ্টিয়া শহর বাইপাস সড়ক নির্মাণ (২য় সংশোধিত)’, ১৮২ কোটি ৬৮ লাখ টাকায় ‘রাজশাহী মহানগরীর রাজশাহী-নওগাঁ প্রধান সড়ক হতে মোহনপুর রাজশাহী নাটোর সড়ক পর্যন্ত পূর্ব-পশ্চিম সড়ক নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ এবং ১১৪ কোটি ২৭ লাখ টাকায় ‘টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলাধীন ধলেশ্বরী নদীর বাম তীরবর্তী গাছ-কুমুল্লী, বারপাখিয়া এবং নাগরপুর উপজেলার ঘোনাপাড়াসহ বাবুপুর-লাউহাটি এফসিডি প্রকল্প এলাকায় তীর সংরক্ষণ’ প্রকল্পও অনুমোদন দেওয়া হয়।