মাতারবাড়ি হবে বাংলাদেশের ‘বিদ্যুৎহাব’

কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়িতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে জাপানের একটি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তি সইয়ের খবর দিয়ে ওই দ্বীপ এলাকাটি ঘিরে বড় পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 August 2017, 04:32 PM
Updated : 27 August 2017, 12:37 PM

মাতারবাড়িতে ১২০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে গত ২৭ জুলাই চুক্তি করে সরকারি সংস্থা কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড বা সিপিজিসিবিএল।

জাপানি কনসোর্টিয়ামে রয়েছে সুমিতোমো করপোরেশন, তোশিবা করপোরেশন ও আইএইচআই করপোরেশন। 

তাদের সঙ্গে চুক্তির খবর জানাতে বৃহস্পতিবার ঢাকার একটি হোটেলে অনুষ্ঠান আয়োজন করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী বলেন, “মাতারবাড়ি হবে বাংলাদেশের বিদ্যুৎহাব।”

বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ঘিরে ভবিষ্যতে এই দ্বীপে যাতে সিঙ্গাপুরে চেয়ে উন্নত অবকাঠামো রূপ পায় সেজন্য জাপানি বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানান তিনি।

দ্বীপ উপজেলা মহেশখোলীতেই প্রায় ১০ হাজার মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এ লক্ষ্যে জাপান ছাড়াও আরও তিনটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মানে চীন ও মালয়েশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা স্মারক ও যৌথ উদ্যোগ চুক্তি করেছে সরকার।

অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত মাতারবাড়িতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতার জন্য জাপানকে ধন্যবাদ জানান।

গুলশান হামলার প্রেক্ষাপটে জাপানসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, “সেই সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধি দলের হয়ে জাপানে গিয়েছিলাম। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্সের কথা সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে এসেছি। যখনই সন্ত্রাসবাদের কোনো আভাস পাই, সেখানেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”

এই চুক্তির মধ্য দিয়ে মাতারবাড়ি ও ঢালঘাটা ইউনিয়নের ১৪১৪ একর জমিতে এই বিদ্যুৎ প্রকল্পটি নির্মাণের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হল। এর কাজ ২০২৩ সালের অক্টোবরে শেষ করার আশা করছে সরকার।

প্রকল্পের সার সংক্ষেপে বলা হয়েছে, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ‘আলট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল টেকনোলজি’ ব্যবহার করা হবে, যাতে কেন্দ্রের কর্মদক্ষতা হবে ৪১ দশমিক ৯ শতাংশ। বাংলাদেশের বর্তমানে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর গড় কর্মদক্ষতা ৩৪ শতাংশের বেশি নয়।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ জানান, গত ৭ বছরে বিদ্যুতের উৎপাদন তিন গুণ বেড়েছে।

বিদ্যুৎ সংকটে থাকা বাংলাদেশে বর্তমানে উৎপাদিত বিদ্যুতের প্রায় ৭০ শতাংশই আসে গ্যাস থেকে; কয়লা থেকে আসে ৩ শতাংশেরও কম। সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে ৩৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগুচ্ছে, যার মধ্যে অর্ধেক আসবে কয়লা থেকে।

অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম, বিইআরসি চেয়ারম্যান মনোয়ারুল ইসলাম, বিদ্যুৎ সচিব আহমেদ কায়কাউস, পিডিবির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ, জাপানের রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওতানাবে উপস্থিত ছিলেন।