এই চুক্তির আওতায় ২০২০ সালের মধ্যে ৫ সেট ট্রেন সরবরাহ করবে জাপানি প্রতিষ্ঠানটি। ২০২১ সালের মধ্যে বাকি ১৯ সেট ট্রেন এবং ডিপো ইকুইপমেন্ট সরবরাহ শেষ হবে।
রোববার ঢাকার একটি হোটেলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতিতে মেট্রোরেলের প্রকল্পপরিচালক আফতার উদ্দিন আহমেদ এবং সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কাওয়াসাকি-মিটসুবিসি কনসোর্টিয়ামের পক্ষে মাকাতো ওগায়োরাচুক্তিতে সই করেন।
গুলশান হামলার পর মেট্রোরেলের কাজ ব্যাহত হলেও এখন পূর্ণ গতিতে কাজ চলছে বলে ওবায়দুল কাদের জানান।
তিনি সাংবাদিকদেরবলেন, “হলি আর্টিজানের ঘটনার পর প্রকল্পের কাজ কিছুটা স্লো হয়ে গিয়েছিল। এখন পুরোদমে শুরু করা হয়েছে। মেট্রোরেল খুব ভালো গতি পেয়েছে। কিছু সময় দেরি হলেও এ প্রকল্প টার্গেটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।”
চুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, প্রকল্পের প্যাকেজ ৮ আওতায় চার হাজার ২৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে রোলিং স্টক ও ট্রেন সিমুলেটর ক্রয়, রোলিং স্টক পরিচালনা সংরক্ষণের জন্য ডিপোর যন্ত্রপাতি ও খুচরা যন্ত্রাংশ ক্রয় এবং রোলিং স্টক প্রকৌশলী, পরিচালনা ও সংরক্ষণের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ অন্তুর্ভুক্ত রয়েছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রতিটি ট্রেনেস্টেইনলেস স্টিলের তৈরি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ছয়টি বগি থাকবে, যাত্রী ধারণক্ষমতা হবে এক হাজার ৭৩৮। বগির উভয় পাশে চারটি দরজা থাকবে। ট্রেনে সিটের ধরন হবে লম্বালম্বি এবং প্রতি ট্রেনে ২টি হুইল চেয়ার থাকবে।এছাড়া থাকবে স্টার্টকার্ড টিকেটিং পদ্ধতি।
রাস্তার মাঝ বরাবর উপর দিয়ে মোট ২৪ জোড়া মেট্রোরেল চলাচল করবে ঢাকায়। উত্তরা থেকে শুরু হয়ে মিরপুর-ফার্মগেইট হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত যাবে এই মেট্রো রেল, সময় লাগবে ৪০ মিনিটেরও কম।
মোট ১৬টি স্টেশন হবে মেট্রোরেলের। এগুলো হবে- উত্তরা (উত্তর), উত্তরা (সেন্টার), উত্তরা (দক্ষিণ), পল্লবী, মিরপুর ১১, মিরপুর-১০ নম্বর, কাজীপাড়া, তালতলা, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেইট, সোনারগাঁও, জাতীয় জাদুঘর, দোয়েল চত্বর, জাতীয় স্টেডিয়াম এবং বাংলাদেশ ব্যাংক এলাকায়।
মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা লাগবে; এর মধ্যে ১৬ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা দেবে জাইকা। বাকি পাঁচ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা জোগাবে সরকার।
গত ২৮ এপ্রিল ভূমি অধিগ্রহণের বিশেষ বিধান রেখে মেট্রোরেল সংক্রান্ত আইনের খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।
২০১২ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) এ প্রকল্প অনুমোদন পায়।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এম এ এন ছিদ্দিক, বাংলাদেশে জাপানের নতুন রাষ্ট্রদূত মাশাতো ওয়াতানাবে, জাইকা বাংলাদেশ অফিসের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ তাকাতোশি নিশিকাতাসহ উর্ধবতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।