ওই দিন সকাল ১১টায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে গভর্নর ফজলে কবির নতুন এই মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন বলে মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা জানিয়েছেন।
সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “গত অর্থবছরের ধারাবাহিকতায় এবারও সতর্ক মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হবে। সেইসঙ্গে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে বেসরকারি খাতে ঋণ জোগান যেন বাধাগ্রস্ত না হয় সেদিকে নজর রাখা হবে।”
মুদ্রানীতি প্রণয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এবারের মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে প্রবাহের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য কিছুটা বাড়িয়ে ১৭ শতাংশ করা হতে পারে।
আগের মুদ্রানীতিতে অর্থাৎ জানুয়ানি-জুন মেয়াদের মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ ঋণ বাড়ানোর লক্ষ্য ধরেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সর্বশেষ তথ্যে দেখা যায়, গত মে পর্যন্ত এ খাতে ঋণ বেড়েছে ১৬ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ।
শুভঙ্কর সাহা বলেন, গত অর্থবছরের (২০১৬-১৭) দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতি সফল হয়েছে। ঐ সময়ে দেশে মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও কম ছিল। জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাজেটে ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়েছে।
“তাই গত মুদ্রানীতির ধারাবাহিকতায় বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য পূরণই হবে নতুন মুদ্রানীতির প্রধান উদ্দেশ্য।”
“অর্থাৎ ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতিতে বড় ধরনের কোন পরিবর্তন আনা হবে না। সতর্কতামূলক অবস্থান বজায় রেখে এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং মূল্যস্ফীতি সহনীয় রাখাই হবে আসল উদ্দেশ্য।”
২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। আর গড় মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশে আটকে রাখার আশা করা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসওয়ারি) জুন মাসে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ। গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ৭ দশমিক ২ শতাংশ। অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ২৪ শতাংশে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে বিবিএস।
বরাবরের মতো এবারও নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণার আগে অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, ব্যাংকার ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাজেট বাস্তবায়নে সরকারের ঘোষিত আর্থিক নীতিকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে প্রতি অর্থবছরে দুটি মুদ্রানীতি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।