বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে এই অনুষ্ঠানে বাঙালির খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন নিয়েও কথা বলেছেন ৮৪ বছর বয়সী অর্থমন্ত্রী।
সিলেটে জন্ম নেওয়া মুহিত তার চৌদ্দ বছর বয়সে নানা বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কথা স্মরণ করে অনুষ্ঠানে বলেন, “আমার খুব ভাল করে মনে আছে। আমাদের দেশের বাজারে গোশত বিক্রি হত তিন-চারটা শহরে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ চারটি শহরে। তারপর দিনাজপুরে শুরু হল বেশ কিছু লোক বিহার থেকে আসার পর।
“অন্য জায়গায় যদি গোশত খাওয়ার ইচ্ছে হত, দল ঠিক করতে হত। পাড়ায় কয়েকজন ঠিক করলেন যে আমরা গরু জবাই দিব, কাটব, ভাগাভাগি করব। টুকরা টুকরা করে নিজেরা ভাগ করে নিব। সে অবস্থা থেকে এখন আমরা আছি এমন অবস্থায় যখন আমাদের প্রত্যেক জেলা শহরেতো বটেই, অনেকগুলো ছোট ছোট জায়গায়ও বাজারে সপ্তাহে অন্তত দুইবার গোশত বিক্রি হয়।”
কেবল মাংস খাওয়ায় নয়, মাছ উৎপাদনে যে উন্নতি বাংলাদেশ দেখিয়েছে, সে তথ্যও মৎস্য মেলার এ অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন মুহিত।
“এটা সত্যিই কৃতিত্বের বিষয়। আমরা মৎস্য উৎপাদনে মোটামুটি স্বয়ংসম্পূর্ণ। কিছুটা বিদেশে রপ্তানি করি, কিছুটা আমদানি করি। এ অবস্থার অনবরত পরিবর্তন হচ্ছে। কারণ আমাদের খানাদানায় পরিবর্তন হচ্ছে।”
নদী ভাঙন আর বাড়ি নির্মাণের কারণে কৃষিজমি হারালেও বাংলাদেশ খাদ্যে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে মন্তব্য করে মুহিত বলেন, “উৎপাদনের জন্য যে জমি সেটা অনবরত কমছে। আগে আমরা এক কোটি ১০ লাখ টন খাদ্য উৎপাদন করতাম, সেখান থেকে এখন প্রায় ৪ কোটি টন খাদ্য উৎপাদন করি। এটা সম্ভব হয়েছে প্রযুক্তির জন্য।”
মাছ থেকে পুষ্টির চাহিদা অনেকটা মিটলেও দেশের অনেক শিশু এখনও অপুষ্টির শিকার হচ্ছে মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমাদের ছোট ছোট শিশু অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়ে যায়। সেই অপুষ্টি থেকে উত্তরণ সহজ হয় না। কারণ এই ফরমেটিভ ইয়ারসে অনেক কিছু নির্দিষ্ট হয়ে যায়।”
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ছায়েদুল হক অনুষ্ঠানে বলেন, প্রতিদিন মাছের চাহিদা ৫৬ থেকে ৬০ গ্রাম ধরলে বাংলাদেশে বছরে ৪২ থেকে ৪৩ লাখ মেট্রিক টন মাছ প্রয়োজন।
মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ আরিফ আজাদের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, সচিব মাকসুদুল হাসান খান, মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান দিলদার আহমদ, মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ইয়াহিয়া মাহমুদ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
মেলার আয়োজক মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, ২৪ জুলাই পর্যন্ত কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে মৎস্য মেলা চলবে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিজেদের কার্যক্রমের প্রদর্শনী নিয়ে এ মেলায় অংশ নিচ্ছে। ৩৭ স্টলের কয়েকটিতে তাজা মাছ বিক্রির ব্যবস্থাও রয়েছে।