চট্টগ্রামের এক্সপ্রেসওয়ে একনেকে অনুমোদন

চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’নির্মাণের প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 July 2017, 06:21 PM
Updated : 11 July 2017, 06:21 PM

চট্টগ্রাম শহর এলাকা ও দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা সৃষ্টি, চট্টগ্রাম শহর কেন্দ্রে ভ্রমণের দূরত্ব ও সময় কমিয়ে আনা, যানজট নিরসন এবং বিমানবন্দরে যাতায়াত সুবিধা বাড়াতে এই প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

সভার পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “বৈঠকে এ প্রকল্পটিসহ মোট ৯টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এসব প্রকল্পের মোট ব্যয় ৬ হাজার ৩৯২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।”

এই অর্থের ৫ হাজার ৯০৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে। প্রকল্প সহায়তা হিসেবে আসবে ৪৩০ কোটি ৪২ লাখ টাকা এবং সংস্থাগুলোর নিজস্ব অর্থায়ন থেকে ৫৭ কোটি টাকা জোগান দেওয়া হবে।

মন্ত্রী বলেন,“২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে চট্টগ্রামের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটির বিষয়ে কিছু দিক নির্দেশনা ও অনুশাসন দেন। ওই অনুশাসন অনুযায়ী প্রকল্পটি সাজিয়ে বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদন দেওয়া হল।”

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন মুরাদপুর, ২ নম্বর গেইট ও জিইসি জংশনে ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় মুরাদপুর থেকে লালখানবাজার পর্য়ন্ত যে ফ্লাইওভারটি নির্মাণাধীন,তা এখন শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে।

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।এ বছরের জুলাই মাস থেকেশুরু করে আগামী ২০২০ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।

বৈঠকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন সংক্রান্ত একটি প্রকল্প উপস্থাপন করা হয়। কিন্তু সেটি অনুমোদন না দিয়ে ফেরত দেওয়া হয় বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়টি ঢাকা ও কেরানীগঞ্জে বিক্ষিপ্তভাবে না করে সমন্বিতভাবে যুগোপযোগী একটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে করতে হবে। এজন্য তিনি কেরানীগঞ্জের সাংসদ ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুকে একটি বড় পরিসরের জমির খোঁজ বের করার দায়িত্ব দিয়েছেন।”

আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই জমির খোঁজ নিয়ে বৈঠকে জানাতে প্রতিমন্ত্রী নসরুলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, এরপর ওই প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হতে পারে।

বৈঠকে ‘পাঁচদোনা-ডাঙ্গা-ঘোড়াশাল সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্প অনুমোদিত হয়, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৬৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।

জামালপুর জেলার তিনটি পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নতিতে ৭৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন পায়।

নরসিংদীর আড়িয়াল খাঁ নদী, হাড়িদোয়া নদী, ব্রহ্মপুত্র নদ, পাহাড়িয়া নদী, মেঘনা শাখা নদী ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র শাখা নদ পুনঃখননের একটি প্রকল্পও অনুমোদিত হয়েছে। এর ব্যয় ধরা হযেছে ৫০০ কোটি ২৮ লাখ টাকা।

এ প্রকল্পটির বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী এ প্রকল্পটির বিষয়ে অনুশাসন দিয়েছেন যে ভারত সরকারও বাংলাদেশের নদী ড্রেজিংয়ের বিষয়ে আগ্রহী। তাই ভারতীয় যৌথ নদী কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করার ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে আমাদের কিছু আর্থিক লাভও হতে পারে।”

অনুমোদন পাওয়া অরেক প্রকল্প হচ্ছেসীমান্ত নদী তীর সংরক্ষণ ও উন্নয়ন (২য় পর্যায়) প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৬৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।

কৃষি (শস্য, মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ) শুমারি ২০১৮’ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।

খুলনার পাইকগাছায় কৃষি কলেজ স্থাপনে ১০১ কোটি ৫৬ লাখ টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে।