এসডিজি: প্রতিবেশীদের তুলনায় পিছিয়ে বাংলাদেশ

জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পূরণের চেষ্টায় প্রতিবেশী চার দেশের তুলনায় পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ।     

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 July 2017, 11:36 AM
Updated : 10 July 2017, 11:41 AM

জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশনস নেটওয়ার্ক গত সপ্তাহে ২০১৭ সালের যে অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তাতে এসডিজি সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৫৭টি দেশের মধ্যে ১২০তম।   

পরিবর্তনশীল বিশ্বে সমতা ও বৈষম্যহীন উন্নয়ন নিশ্চিত করতে দুই বছর আগে জাতিসংঘে গৃহীত এসডিজিতে ২০৩০ সালের মধ্যে পূরণের জন্য মোট ১৭টি লক্ষ্য স্থির করা হয়। সেসব ক্ষেত্রে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর অগ্রগতি বিচার করেই এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।    

এসডিজি সূচকে বাংলাদেশের সার্বিক স্কোর একশর মধ্যে ৫৬.২। এই তালিকায় সবচেয়ে ভালো অবস্থানে থাকা সুইডেনের স্কোর ৮৫.৬ এবং সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রের স্কোর ৩৬.৭। 

আঞ্চলিক বিচারে বাংলাদেশের স্কোর পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার গড় স্কোর ৬৩.৩ এর চেয়ে কম।    

বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে এই সূচকে শ্রীলঙ্কার অবস্থান সবচেয়ে ভালো। ৬৫.৯ স্কোর নিয়ে শ্রীলঙ্কা আছে সূচকের ৮১ নম্বর অবস্থানে।

এছাড়া ৬৫.৫ স্কোর নিয়ে ভুটান ৮৩তম; ৬১.৬ স্কোর নিয়ে নেপাল ১০৫তম; ৫৯.৫ স্কোর নিয়ে মিয়ানমার ১১০তম এবং ৫৮.১ স্কোর নিয়ে ভারত ১১৬তম অবস্থানে রয়েছে।  

সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে আছে কেবল পাকিস্তান (স্কোর: ৫৫.৬, অবস্থান: ১২২) এবং আফগানিস্তান (স্কোর: ৪৬.৮, অবস্থান: ১৫০)।

এসডিজির ১৭টি লক্ষ্যের মধ্যে ১০টির অগ্রগতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আছে লাল তালিকায়। এর অর্থ হল, এসব লক্ষ্য পূরণ করতে গেলে বাংলাদেশকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।    

এসডিজি-২ এ খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ক্ষুধামুক্তি, এসডিজি-৩ এ সবার জন্য স্বাস্থ্যসম্মত জীবন নিশ্চিত করা, এসডিজি-৪ এ ন্যায্যতাভিত্তিক ও মানসম্মত শিক্ষার সুযোগ, এসডিজি-৭ এ সহজলভ্য ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানির প্রাপ্যতা, এসডিজি-৮ এ সবার মানসম্মত কর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্থিতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, এসডিজি-৯ এ অবকাঠামো, শিল্পায়ন ও উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ব্যবহার, এসডিজি-১১ এ টেকসই নগর উন্নয়ন ও নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা, এসডিজি-১৪ এ সমুদ্রসম্পদের টেকসই উন্নয়ন ও ব্যবহার, এসডিজি-১৬ এ শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় প্রাতিষ্ঠানিক উন্নতি এবং এসডিজি-১৭ তে এসডিজি বাস্তবায়নে বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব সৃষ্টির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আছে লাল তালিকায়।

এর মধ্যে এসডিজি-৯ এবং এসডিজি-১১ তে বাংলাদেশের স্কোর সবচেয়ে কম, একশর মধ্যে যথাক্রমে ১২.৫ ও ১৪। আর সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি এসেছে এসডিজি-১ এ দারিদ্র্য দূরীকরণে। এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্কোর ৯৪.৪।    

এসডিজি-১ সহ সাতটি লক্ষ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সূচকের হলুদ তালিকায় রাখা হয়েছে। এর অর্থ হল, এসব ক্ষেত্রে লক্ষ্য অর্জনে আরও অনেক কাজ করতে হবে।  

সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষমাত্রার (এমডিজি) মেয়াদ পূর্তির পর ২০১৫ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়, যার লক্ষ্য বিশ্বকে ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও অসাম্য থেকে মুক্ত করা।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে সহায়তার অংশ হিসেবে চার বছরে বাংলাদেশকে ১২০ কোটি ডলার সহায়তা দিতে গতবছর একটি চুক্তি করে জাতিসংঘ।