সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের (এসএনবি) বার্ষিক প্রতিবেদন ‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড ২০১৬’ বলছে, দেশটির ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের জমা অর্থের পরিমাণ ২০১৫ সালের ৫৫ কোটি সুইস ফ্রাঁ থেকে বেড়ে ২০১৬ সালে ৬৬ কোটি ১৯ লাখ সুইস ফ্রাঁ হয়েছে।
অর্থাৎ, বাংলাদেশি মুদ্রায় হিসাব করলে ৫৫০০ কোটি টাকার বেশি অর্থ বাংলাদেশিরা সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে জমা করেছেন। এর মধ্যে ২০১৫ থেকে ২০১৬ সালে জমার পরিমাণ বেড়েছে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা।
আর সুইজারল্যান্ডের ২৬১টি ব্যাংকে গতবছর সব বিদেশি গ্রাহকের জমা অর্থের পরিমাণ ১.৪১ ট্রিলিয়ন সুইস ফ্রাঁ থেকে বেড়ে ১.৪২ ট্রিলিয়ন সুইস ফ্রাঁ হয়েছে।
সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অর্থের পরিমাণ প্রথমবার দশ কোটি সুইস ফ্রাঁ ছাড়িয়ে যায় ২০০৬ সালে, যেটি ছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শেষ বছর।
নয় কোটি ৭২ লাখ সুইস ফ্রাঁ থেকে বেড়ে ওই বছর জমার পরিমাণ দাঁড়ায় ১২ কোটি ৪৩ লাখ সুইস ফ্রাঁ। এরপর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রথম বছর ২০০৭ সালে জমা অর্থের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে ২০ কোটি ৩০ লাখ সুইস ফ্রাঁতে দাঁড়ায়।
এরপর থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশিদের জমা অর্থের পরিমাণে ওঠানামা দেখা গেলেও বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ২০১২ সাল থেকে তা ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে।
বাংলাদেশ থেকে সুইস ব্যাংককে জমা অর্থের পরিমাণ
>> ২০১৩ সালে জমা ছিল ৩১ কোটি ১৮ লাখ সুইস ফ্রাঁ
>> ২০১৪ সালে জমা ছিল ৫০ কোটি ৬০ লাখ সুইস ফ্রাঁ
>> ২০১৫ সালে জমা ছিল ৫৫ কোটি ৮ লাখ সুইস ফ্রাঁ
>> ২০১৬ সালে জমা ছিল ৬৬ কোটি ১৯ লাখ সুইস ফ্রাঁ
কঠোরভাবে ব্যাংক গ্রাহকদের তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার যে নীতি সুইজারল্যান্ড দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে বজায় রেখে আসছিল, তা শিথিল হচ্ছে আগামী বছর থেকে। কালোটাকা ও অর্থ পাচার রোধে সুইস সরকারের এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে বিভিন্ন দেশের ট্যাক্স এজেন্সিগুলো তাদের গ্রাহকদের লেনদেনের তথ্য নিতে পারবে।
বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারত ২০১৯ সাল থেকে সুইস ব্যাংকগুলোর তথ্য পাওয়ার জন্য ইতোমধ্যে চুক্তি করেছে। এর ফলে গতবছর সুইস ব্যাংকে ভারতীয়দের অর্থ জমার পরিমাণ প্রায় অর্ধেক কমে ৬৭ কোটি ৬০ লাখ সুইস ফ্রাঁতে নেমে এসেছে।