‘কালো থেকে সাদা’ হয়েছে ১৩ হাজার কোটি টাকা

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত অপ্রদর্শিত ১৩ হাজার ৩৭২ কোটি টাকা বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে বলে সংসদে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 June 2017, 07:50 AM
Updated : 8 June 2017, 08:52 AM

ওই অর্থ বৈধ করার সুযোগের বিপরীতে সরকার এক হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা রাজস্ব পেয়েছে বলেও বৃহস্পতিবার এমপি এম আবদুল লতিফের এক প্রশ্নে জানিয়েছেন তিনি।

স্বাধীনতার পর কোন সময়ে কত ‘কালো টাকা সাদা’ হয়েছে তার একটি পরিসংখ্যানও মুহিত সংসদের সামনে তুলে ধরেন। তবে তা যোগ করলে বৈধ হওয়া টাকার অংক ১৪ হাজার কোটি ছাড়িয়ে যায়।

>> ১৯৭২-৭৫ (আওয়ামী লীগ সরকার): দুই কোটি ২৫ লাখ টাকা

>> ১৯৭৬-৮১ (জিয়াউর রহমানের সেনাশাসন ও বিএনপি সরকার): ৫০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা

>> ১৯৮২-৯০ (এইচ এম এরশাদের সেনাশাসন ও জাতীয় পার্টির সরকার): ৪৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকা

>> ১৯৯১-৯৬ (খালেদা জিয়ার বিএনপি সরকার): ১৫০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা

>> ১৯৯৭-২০০০ (শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার): ৯৫০ কোটি ৪১ লাখ টাকা

>> ২০০১-০৬ (খালেদা জিয়ার চার দলীয় জোট সরকার): ৮২৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকা

>> ২০০৭-০৮ (সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার): ৯ হাজার ৬৮২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা

>> ২০০৯-১৩ (শেখ হাসিনার মহাজোট সরকার): ১ হাজার ৮০৫ কোটি টাকা

>> ২০১৪- এ পর্যন্ত (শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার): ৮৫৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা

আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী, নির্ধারিত করের সঙ্গে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ হারে জরিমানা দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রয়েছে। এ সুযোগ নিয়ে প্রতিবারই বাজেটের সময় আলোচনা হয়।

বছরের পর বছর এভাবে কালো টাকা সাদা করার সুযোগের কারণে সৎ করদাতারা নিরুৎসাহিত হচ্ছেন জানিয়ে অর্থনীতির বিশ্লেষকরা একটি স্থায়ী সমাধান খোঁজার তাগিদ দিয়ে এলেও প্রতিবছরই বাজেটে ওই সুযোগ রাখা হচ্ছে।

আসন্ন ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে তিনভাবে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়েছে। এগুলো হল- রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ, বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিলে বিনিয়োগ এবং স্বেচ্ছায় ঘোষণা দিয়ে নির্দিষ্ট জরিমানার মাধ্যমে অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করা।

সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহর এক প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী জানান, বিদ্যমান আয়কর আইন অনুযায়ী বাণিজ্যিকভাবে সকল কিন্ডারগার্টেন, কেজি স্কুল বা মাদ্রাসার আয় করযোগ্য। অন্যান্য করযোগ্য প্রতিষ্ঠানের মত এসব প্রতিষ্ঠান থেকেও রাজস্ব আহরণ করা হচ্ছে।

এছাড়া করযোগ্য আয় রয়েছে এমন নতুন কিন্ডারগার্টেন, কেজি স্কুল বা মাদ্রাসা শনাক্ত করার মাধ্যমে করের আওতায় আনতে নিয়মিত জরিপ চালানো হচ্ছে।