পর্যটন খাতে আট বছরে আয় সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা: মন্ত্রী

পর্যটন খাতে গত আট বছরে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা আয় হয়েছে বলে জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন বেসমারিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 June 2017, 07:54 AM
Updated : 7 June 2017, 07:57 AM

সংসদের বুধবারের অধিবেশনে সরকারদলীয় সাংসদ আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইনের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ২০০৯ সাল থেকে গত আট বছরে ছয় হাজার ৬৯৯ দশমিক ১৬ কোটি টাকা পর্যটন শিল্পের মাধ্যমে আয় হয়েছে। 

২০১৬ সালে পর্যটন খাত থেকে ৮০৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা, ২০১৫ সালে এক হাজার ১৩৬ কোটি ৯১ লাখ টাকা, ২০১৪ সালে এক হাজার ২২৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা, ২০১৩ সালে ৯৪৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, ২০১২ সালে ৮২৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা, ২০১১ সালে ৬২০ কোটি ১৬ লাখ টাকা, ২০১০ সালে ৫৫৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা এবং ২০০৯ সালে ৫৭৬ কোটি ২২ লাখ টাকা আয় হয়েছে।

সরকারি দলের এস এম মোস্তফা রশিদীর প্রশ্নের জবাবে বিমানমন্ত্রী বলেন, “আগে কয়েক বছর ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশ বিমান লোকসান করলেও গত দুই অর্থবছরে বিমান লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে।”

(ফাইল ছবি)

আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রমাগত জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি এবং আগে পুরাতন এফ ২৮, ডিসি ১০-৩০ ও এ ৩১০-৩০০ উড়োজাহাজ দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করা হত বলেই লোকসান হত বলে মন্তব্য করেন মেনন।

তিনি বলেন, “এগুলোর মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ ও জ্বালানি ব্যয় অত্যধিক ছিল এবং ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে উড়োজাহাজ ক্রয়ের বিপরীতে ডেট সার্ভিসিং ব্যয় বৃদ্ধি এবং লিজকৃত উড়োজাহাজের অর্থ পরিশোধের কারণে বিমান লোকসানে ছিল।”

এদিকে বেগম লুৎফা তাহেরের প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী জানান, হাওর অঞ্চলে ছয়টি জেলায় স্বাভাবিক সময়ের তিন সপ্তাহ আগে পাহাড়ি ঢল আসায় অন্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি ক্ষতি হয়েছে। সিলেট, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জে মোট ছয় লাখ ২৩ হাজার ৩৭৯ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। 

মতিয়া বলেন, এই ছয় জেলায় দুই লাখ ৪৯ হাজার ৮৬০ হেক্টর জমির বোরো ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল নয় লাখ ৬৪ হাজার মেট্রিক টন। সমপরিমাণ বোরো চাল জাতীয় উৎপাদন থেকে কম হবে।

জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, “হাওর এলাকায় কৃষকদের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠতে আগামী রবি মৌসুমে পুনর্বাসন কর্মসূচি নেবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। আগামী আমন ও বোরো মৌসুমে বিনামূল্যে বিভিন্ন কৃষি উপকরণ সরবরাহের লক্ষে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হচ্ছে।”

আব্দুল মুনিম চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল বলেন, “যেসব মুক্তিযোদ্ধা আবেদন করেও হাই কোর্টের স্থগিতাদেশ এবং অন্যান্য প্রক্রিয়াগত কারণে এখনও সনদ পাননি কিন্তু এরই মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন সেসব মুক্তিযোদ্ধার প্রকৃত উত্তরাধিকারী জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে অনলাইনে আবেদন করে থাকলে সেসব মুক্তিযোদ্ধাদেরও উপজেলা পর্যায়ে গঠিত যাচাই বাছাই কমিটির মাধ্যমে যাচাই বাছাই কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর মৃত্যুবরণকারী মক্তিযোদ্ধারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা বিবেচিত হলে তাদের ওয়ারিশরা বিধি মোতাবেক সুযোগ সুবিধা পাবেন।”

স্বতন্ত্র সাংসদ রহিম উল্লাহর প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী জানান, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নির্ণয়ে যাচাই বাছাইয়ের জন্য ৪৫৯ টি উপজেলা কমিটি, পাবর্ত্য জেলাগুলোতে তিনটি জেলা কমিটি, আটটি মহানগর কমিটিসহ মোট ৪৭০টি যাচাই বাছাই কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সরকারি দলের মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু জানান, বিদ্যমান ইটভাটার ৬৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ আধুনিক প্রযুক্তির পরিবেশবান্ধব ইটভাটায় রূপান্তরিত হয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে ২০১৭ সালের মার্চ পর্যন্ত ৫০৫টি ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ১৩ কোটি ৭৯৮ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ধার্য করা হয়। ২০১৪ থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ২৮৫টি ইট ভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে তিন কোটি ৪৫ লাখ টাকা আদায় হয়েছে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে মঞ্জু জানান, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত দেশের এক হাজার ৫৫৩টি শিল্প প্রতিষ্ঠানে ইটিপি স্থাপন করা হয়েছে।