অর্থ পাচার: ‘আগামী মাসেই ব্যবস্থা’

দেশ থেকে মুদ্রা পাচারের সুযোগ কমাতে জুলাই মাসে নতুন কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 June 2017, 09:17 AM
Updated : 6 June 2017, 12:00 PM

মঙ্গলবার সংসদ ২০১৬-১৭ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের আলোচনায় একথা জানালেও বিস্তারিত বলেননি তিনি।

মুহিত বলেন, “অর্থ পাচার যেটা হয় সেটা বেআইনি, সেটা রুদ্ধ করার সুযোগ নেই। তবে যেটা আমরা করতে পারি তা হচ্ছে পাচারের সুযোগ কমানো। এর অর্থ হচ্ছে কালো টাকা দেশে যাতে না হয় সেই ব্যবস্থা নেওয়া। আমরা এবিষয়ে কিছু ব্যবস্থা নিচ্ছি। আগামী মাসের মধ্যেই এটা দেখা যাবে।

“আর কালো টাকাকে সাদা করার জন্য কোনো প্রস্তাব গত কয়েক বছর ধরে দিচ্ছি না। তবে নিয়মিতভাবে কালো টাকা সাদা করার ব্যবস্থা প্রচলিত আইনে রয়েছে।”

২০ শতাংশ জরিমানা দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দুই বছর ধরে বিদ্যমান আছে বলে অর্থমন্ত্রী জানান।

মুদ্রাপাচার বিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যানশিয়াল ইন্টেগ্রিটির (জিএফআই) হিসাবে, ২০১৪ সালে বাংলাদেশ থেকে ৭০ হাজার কোটি টাকার বেশি (৮৯৭ কোটি ডলার) পাচার হয়েছে; তার আগে ১০ বছরে ৭৫ বিলিয়ন ডলার হারিয়েছে।

বৈদেশিক বাণিজ্যে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ও অন্যান্য অবৈধ পথে এই অর্থ পাচার করা হয়েছে বলে সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

বর্ধিত আবগারি শুল্ক নিয়ে মুহিত বলেন, “ব্যাংকের আমানতের ওপর কর ধার্য নতুন কিছু নয়, আগেই ছিল। আপনারা বহু বছর ধরে অনবরত দিয়ে যাচ্ছেন। আমি করের হারটা একটুখানি বাড়িয়েছি।”

সঞ্চয়পত্রের সুদের হার নিয়ে তিনি বলেন, “আমি আগেই বলেছি সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কিছুটা কমানো হবে। সাধারণত সঞ্চয়পত্রের সুদের হার বাজারের সুদের হারের থেকে একটু বেশি রাখা হয়। তবে খুব বেশি রাখা ‍উচিত নয়।

“আমাদের সামগ্রিক একটি হিসাব হলো যে, মার্কেট ইন্টারেস্ট রেটের থেকে কমপক্ষে দুই শতাংশ বা তার বেশি রাখা দরকার। সেই অনুযায়ী এই রেট নির্ধারণ করা হবে। তবে এজন্য একটু সময় লাগবে।”

আফ্রিকার কয়েকটি দেশ ছাড়া প্রত্যেকটি দেশেরই রেমিটেন্স কমেছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, “রেমিটেন্স কমার যথেষ্ট কারণও রয়েছে। রেমিটারদের অনেকেই এখন বিদেশে বাসস্থান গড়ছেন। তারা বিদেশের নাগরিক হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এজন্য সেখানে তারা যথেষ্ট সম্পদ রাখেন।”

বক্তব্যের শুরুতেই অর্থমন্ত্রী জানিয়ে দেন, তিনি জাতীয় পার্টির সরকারের নয়, অন্তবর্তীকালীন নির্দলীয় সরকারের মন্ত্রী ছিলেন।

“আমি জাতীয় পাটির সদস্যও ছিলাম না, মন্ত্রী তো দূরের কথা। এইচ এম এরশাদ ১৯৮২ সালে ঘোষণা করলেন যে তিনি অন্তবর্তীকালীন নির্দলীয় সরকার গঠন করেছেন। এর দুবছর পর তিনি পার্টি গঠন করেন। পাটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত চাইলে আমি পদত্যাগের কথা জানিয়ে দেই এবং পরে পদত্যাগ করি। এটা সবার জানা উচিত।

“ইতিহাসে আমি বোধ হয়, একমাত্র মন্ত্রী যে অনুষ্ঠান করে আমাকে বিদায় দেওয়া হয়। এ জন্য ধন্যবাদ এরশাদ সাহেবকে। উনি সজ্জন ব্যক্তি।”