ব্যাংক হিসাবে বর্ধিত শুল্ক তুলে নেওয়ার দাবি সংসদে

বাজেট প্রস্তাবে ব্যাংক হিসাবের উপর আরোপিত বর্ধিত আবগারি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন সরকার দলীয় এক সংসদ সদস্য।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 June 2017, 07:29 AM
Updated : 5 June 2017, 07:29 AM

সোমবার ২০১৬-১৭ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনায় এ দাবি তুলেন হুইপ শহীদুজ্জামান সরকার।

তিনি বলেছেন, “আমাদের দেশে খুব তাড়াতাড়ি প্যানিক ছড়ায়। এবার ছড়িয়েছে আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক নিয়ে। প্যানিক সৃষ্টি হয়েছে আমানতের টাকা কেটে নেওয়া হবে।

“গ্রামের মানুষ এক লাখ-দুই লাখ টাকা ব্যাংকে রাখে। আমাদের বাজেট অনেক বড়। আমি অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ করতে চাই, আগেরটাই (আবগারি শুল্ক) যেন বহাল থাকে।”

আসছে অর্থবছরের জন্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত যে বাজেট সংসদে উপস্থাপন করেছেন, তাতে বছরের যে কোনো সময় ব্যাংক হিসাবে এক লাখ টাকার বেশি স্থিতি থাকলে আবগারি শুল্ক বিদ্যমান ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০০ টাকা আরোপ করা হয়েছে।

১০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ১ হাজার ৫০০ টাকার বদলে ২ হাজার ৫০০ টাকা, ১ কোটি থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ৭ হাজার ৫০০ টাকার বদলে ১২ হাজার টাকা এবং ৫ কোটি টাকার বেশি লেনদেনে ১৫ হাজার টাকার বদলে ২৫ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।

সাধারণ নাগরিকদের পাশাপাশি ব্যবসায়ী, ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদরাও আবগারি শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে যোক্তিক মনে করেছেন না। তারা বলছেন, লেনদেনের অবৈধ মাধ্যম উৎসাহিত হবে।

ব্যাপক সমালোচনার মুখে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ব্যাংকে যাদের এক লাখ টাকা রাখার সামর্থ্য আছে তারা সম্পদশালী। তারা বাড়তি ভারটা বহন করতে পারবেন, সমস্যা হবে না।

তবে রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাজেটে কোনো সমস্যা থাকলে তা সমাধান করা হবে।

সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনায় শহীদুজ্জামান বলেন, “এনবিআরের লক্ষ্য ছিলে ২ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়। সেটার ১০ শতাংশ কমে হয়েছে ২ লাখ ১৮ হাজার টাকা। এটা এখন পর্যন্ত সর্ববৃহৎ রাজস্ব আদায়। এজন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাই।”

বছরজুড়েই রাজস্ব আদায়ে এনবিআরের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “প্রথম নয়মাসে আশানুরূপ রাজস্ব আদায় হচ্ছে না। শুরু থেকে রাজস্ব আদায়ের বিষয়টিতে জোর দেওয়া দরকার। তাহলে সমতার ভিত্তিতে এটা করা যায়।

“শেষ তিন মাসে তাড়াহুড়ো করতে গেলে অনেক অনিয়ম হয়।”

সঞ্চয়পত্রের সুদ না কমানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “সঞ্চয়পত্রে যে লক্ষ্য ধরেছিলাম ১৯ হাজার কোটি টাকা; অর্জন হয়েছে ৪২ হাজার কোটি টাকা।

“সঞ্চয়পত্রে ওপর যাতে কাঁচি না চলে। একে আরও সহজ করার যদি প্রক্রিয়া থাকে সেটা অনুসরণ করতে হবে। অর্থমন্ত্রীকে সেই অনুরোধ করবো।”

হুইপ শহীদুজ্জামান বলেন, “ভ্যাটের আওতা কমিয়ে আয়কর ও অন্য প্রত্যক্ষ কর বাড়াতে পারলে আমরা মানুষকে আরও স্বস্তি দিতে পারতাম। কর আদায়ের এই প্রক্রিয়াগুলো অর্থমন্ত্রী গ্রহণ করবেন বলে আমার আশা।

দুর্নীতির ফাঁকফোকর বন্ধ করতে পারলে বাজেটের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে নিবন্ধিত সব বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করার দাবি জানান সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন।

তিনি বলেন, “১৬ বছর ১৮ বছর ধরে শিক্ষরা বেতন পাচ্ছে না- এটা অমানবিক। তারা যাতে মানবিক জীবনযাপন করতে পারে সেজন্য এমপিওভুক্ত করতে হবে।

“সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করে দেন। রেজিস্টার্ড হয়েছে, তাহলে এমপিওভুক্ত হবে না কেন?”