৫০ হাজার টন চাল আমদানির দরপত্র

সরকারি গুদামের মজুদ তিন লাখ মেট্রিক টনে নেমে আসায় ৫০ হাজার টন চাল আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র ডেকেছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 May 2017, 06:15 AM
Updated : 9 May 2017, 03:18 PM

আওয়ামী লীগ সরকারের বর্তমান মেয়াদে এই প্রথমবারের মত সরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির উদ্যোগে নেওয়া হল বলে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। 

সোমবার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওই দরপত্রে বলা হয়, আগ্রহী দরদাতাদের আগামী ২১ মের মধ্যে খাদ্য অধিদপ্তরে তাদের প্রস্তাব জমা দিতে হবে।

এই ৫০ হাজার টন ‘নন বাসমতি সেদ্ধ’ চালের ৬০ শতাংশ চট্টগ্রাম বন্দর এবং বাকি ৪০ শতাংশ মোংলা দিয়ে আমদানি করা হবে। 

খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বদরুল হাসানকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, শষ্যের মজুদ ছয় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে এবং স্থানীয় বাজারে চালের দাম বাড়তে থাকায় সরকারিভাবে মোট ছয় লাখ টন চাল আমদানির পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ৫০ হাজার টনের দরপত্র দেওয়া হল।

এদিকে অকাল বন্যায় হাওরে ব্যাপক ফসলহানির প্রেক্ষাপটে রোজার আগে চালের আমদানি শুল্কও সাময়িকভাবে প্রত্যাহারের চিন্তা রয়েছে সরকারের।

নেত্রকোণার কয়রা হাওরে ডুবে যাওয়া আধাপাকা ধান কেটে রাখা হচ্ছে বাঁধে। ২৫ এপ্রিলের ছবি ।

গত সপ্তাহে চালকল মালিকদের সঙ্গে এক বৈঠকের পর খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, কোনো দেশেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর সাধারণত শুল্ক থাকে না। বাংলাদেশেও একসময় ছিল না। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতি মুনাফা লাভের আশায় চাল আমদানি করায় শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল।

“পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সাময়িকভাবে আগের অবস্থায় এ ট্যাক্স উঠিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব সরকারের কাছে দিয়েছি, তাদের বিবেচনায় আছে। মনে করছি, ট্যাক্সটা কমে গেলে মূল্যবৃদ্ধির কারসাজি হ্রাস পাবে।”

বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৫ থেকে ২০ লাখ টন চাল উদ্বৃত্ত থাকে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী সম্প্রতি বলেছিলেন, বাংলাদেশে বার্ষিক প্রায় ৩ কোটি টন চালের চাহিদা মেটাতে সমস্যা হবে না।

কিন্তু খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী গত ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি গুদামগুলোতে চালের মজুদ ছিল ৩ লাখ ৫ হাজার টন। অথচ গতবছর এপ্রিলে মজুদে সাড়ে ৭ লাখ টনের বেশি চাল ছিল।

গতবছর সেপ্টেম্বরে চালু হওয়া খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে ১০ টাকা কেজি দরে সাড়ে সাত লাখ টন চাল বিতরণের ফলেই মজুদে টান পড়েছে বলে কর্মকর্তাদের বরাতে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে। 

সরকার চলতি বোরো মৌসুমে সরকার ৭ লাখ টন ধান এবং ৮ লাখ টন চাল কেনার লক্ষ্য ঠিক করলেও সেই লক্ষ্য পূরণ নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে মার্চের শেষে হাওর অঞ্চলে বাধ ভেঙে অকাল বন্যার কারণে।

হাওর অঞ্চলের জেলাগুলোতে এই বন্যার কারণে ছয় লাখ টনের মতো ধান নষ্ট হয়েছে বলে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব। তবে বেসরকারি সংস্থাগুলোর হিসাবে ফসলহানির পরিমাণ ২২ লাখ টন।

খাদ্য সচিবের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) শামীমা সুলতানা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ধারণা করছি প্রকিউরমেন্ট এবার কম হতে পারে। আর বাজারে যেহেতু (চালের) দাম বেশি, সে কারণে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে আমদানি করা হবে।”