বিনিয়োগ পরিবেশে শিগগিরই বড় পরিবর্তনের আশা বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যানের 

বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার চেষ্টার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগে গতি আনতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে জানিয়ে এ প্রতিষ্ঠানের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলাম বলেছেন, শিগগিরই একটি বড় পরিবর্তন আসবে বলে তিনি আশা করছেন। 

সৈয়দ নাহাস পাশা লন্ডন প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 May 2017, 05:01 AM
Updated : 5 May 2017, 09:33 AM

মালয়েশিয়ার মে ব্যাংকের আয়োজনে ‘ইনভেস্ট এশিয়া ২০১৭’ শীর্ষক দুই দিনের একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন কাজী আমিনুল।

সম্মেলনের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ও বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক বিকল্প নির্বাহী পরিচালক কাজী আমিনুল।

বিভিন্ন সেশনে অংশ নেওয়ার ফাঁকে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে কথা বলেছেন বিনিয়োগ পরিস্থিতি, পুঁজিবাজারের সম্ভাবনা, রানা প্লাজা পরবর্তী বাংলাদেশের পোশাক খাত, বিডার বিভিন্ন কার্যক্রম এবং বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ নিয়ে।

কাজী আমিনুল বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ বিভিন্ন সংস্কারের মধ্য দিয়ে একটি উদার বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরি করেছে, যা কিছু ক্ষেত্রে থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ার চেয়েও উৎসাহব্যাঞ্জক। বাংলাদেশকে একটি আকর্ষণীয় বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছে সরকার।

সেই সঙ্গে স্থানীয় বিনিয়োগে গতি আনতে বিডা ‘ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশনের’ বিষয়টি কেবল ঢাকা চট্টগ্রামের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, “অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশে একটি বড় পরিবর্তন দেখা যাবে। ইতোমধ্যে এটার লক্ষণ দেখা দিয়েছে।”

বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, পণ্য পর্যায়ে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততা যতটা গভীর, বিনিয়োগ ও অর্থায়নের ক্ষেত্রে ততটা নয়। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্পে সরাসরি অংশগ্রহণ করতে পারেন এবং তহবিল যোগাতে পারেন- সেই বার্তা তাদের জানানো হচ্ছে।

বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে এখন অনেক বেশি ‘নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল’ হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে আসার জন্যও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। নাসডাক, ডাও জোন্সের মত বিদেশি অপারেটরদের বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে যুক্ত করা যায় কি না, সে বিষয়েও আলোচনা হচ্ছে।

“এটা শুধু টাকার বিষয় নয়, বিদেশি বিনিয়োগের সঙ্গে তাদের যে নলেজ আছে, এক্সপার্টিজ আছে, গ্লোবাল বেস্ট প্র্যাকটিসেস আছে, সেগুলো বাংলাদেশে যাওয়া প্রয়োজন। শুধু স্থানীয় অর্গানাইজেশনের পক্ষে ফাইনানশিয়াল সেক্টরকে বিশ্বমানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না। সেজন্য আমরা এই ক্ষেত্রেও বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করছি। এখানে অনেকের সাথে কথা হয়েছে, আমি বলেছি- তোমরা বাংলাদেশে আস।”

কাজী আমিনুল বলেন, বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশে ওয়ানস্টপ সার্ভিস চালুর বিষয়ে আইন হয়েছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এ সেবা চালু করা গেলে সেবা নিতে কাউকে আর কোনো দপ্তরে যেতে হবে না। যে কোনো জায়গায় বসে যে কোনো বিনিয়োগকারী এ সুবিধা নিতে পারবে।

অডিও সাক্ষাৎকার

“আশা করা যায় তা বিশ্বমানের হবে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ বিশ্বমানের বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে পরিচিতি পাবে।”

বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপিন্স ও শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন ব্যাংক ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং সরকারি কর্মকর্তারা লন্ডনের মে ফেয়ার হোটেলে এই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।