জেলা-উপজেলায় ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র করবে সরকার

দেশের সব জেলা-উপজেলায় সরকার একটি করে ৫৬০টি মসজিদ নির্মাণ করবে, যেগুলোকে ইসলামিক সংস্কৃতির প্রধান কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 April 2017, 12:07 PM
Updated : 25 April 2017, 12:07 PM

এসব কেন্দ্রে গ্রন্থাগার, দাওয়া ওয়াল কার্যক্রম, কোরান পঠন ও তাহফিজ, শিশুদের শিক্ষা, নারী ও পুরুষের জন্য পৃথক ওজু ও নামাজ ঘর, অতিথিশালা, বিদেশি পর্যটকদের জন্য ভ্রমণ সুবিধা, মৃতদেহ গোসল করানো এবং হজযাত্রী ও ইমামদের প্রশিক্ষণ সুবিধা দেওয়া হবে।

মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ‘প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে।

সৌদি আরবের অর্থায়নে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে বলে একনেকের সভার পর এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

এনইসির সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেকের সভায় এটিসহ মোট ১৩টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।

জেলা-উপজেলায় মসজিদ কাম ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “গত বছর ৩ থেকে ৬ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৌদি আরব সফরের সময় সেদেশের বাদশাহকে বাংলাদেশের উপজেলা পর্যায়ে ইসলামিক সাংস্কৃতিক সেন্টার স্থাপনের প্রস্তাব দিলে সৌদি বাদশাহ তাতে অর্থায়নের আগ্রহ দেখান। পরবর্তীতে সরকার এ প্রকল্পটি তৈরি করে আজ চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হলো।”

মন্ত্রী বলেন, “এই মসজিদে আলাদা আলাদাভাবে নারী-পুরুষ নামাজ আদায় করতে পারবে। এটি দেশের ইতিহাসে ধর্মীয় খাতে এককভাবে সর্বোচ্চ ব্যয়ের প্রকল্প।”

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে নয় হাজার ৬২ কোটি টাকা। এরমধ্যে সৌদি সরকারের অনুদান হিসেবে পাওয়া যাবে আট হাজার ১৭০ কোটি টাকা।

মন্ত্রী বলেন, বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া ১৩টি প্রকল্পের সম্মিলিত ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২০ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা। এরমধ্যে প্রকল্প সাহায্য হিসেবে পাওয়া যাবে ১০ হাজার ৬২৩ কোটি টাকা আর বাকিটা সরকারি তহবিল থেকে যোগান দেওয়া হবে।

বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে- ‘জেলা পর্য়ায়ে আইটি/হাইটেক পার্ক স্থাপন (১২টি জেলায়) প্রকল্প’। এর ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় এক হাজার ৭৯৬ কোটি টাকা।

‘পটুয়াখালী (পায়রা)-গোপালগঞ্জ ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন এবং গোপালগঞ্জ ৪০০ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে’র ব্যয় তিন হাজার ২৯৪ কোটি টাকা।

‘মহেশখালী-আনোয়ারা গ্যাস সঞ্চালন সামন্তরাল পাইপলাইন নির্মাণ প্রকল্পে’ ব্যয় হবে এক হাজার ১০৯ কোটি টাকা।

‘কর্ণফূলী নদীর তীর বরাবর কালুঘাট সেতু হতে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে’র ব্যয় এক হাজার ৯৭৯ কোটি টাকা।  

এছাড়া ‘গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশ্বস্ততায় উন্নীতকরণ (ময়মনসিংহ অঞ্চল)’ এর ব্যয় ৭৯৮ কোটি টাকা। ‘থানচি-রিমাক্রি-মদক-লিকরি সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে’ ব্যয় হবে ৪৬৯ কোটি টাকা, ‘কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প, তৃতীয় পর্যায় (শিলখালী-টেকনাফ)’ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৪৫৬ কোটি টাকা।

‘সিলেট শহর বাইপাস-গ্যারিসন লিংক টু শাহপরান সেতু ঘাট সড়ক ৪ লেন মহাসড়কে উন্নয়ন’ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৩৫ কোটি টাকা, ‘খালিশপুর-মহেশপুর-দত্তনগর-জিন্না নগর-জাদবপুর মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্পের’ ব্যয় ৭৮ কোটি টাকা।

অনুমোদন পাওয়া ‘সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট স্থাপন’ প্রকল্পে ৯৭ কোটি, ‘ঢাকা শহরে তিনটি পাইকারি কাঁচাবাজার নির্মাণ’ প্রকল্পে (২য় সংশোধিত) ৩৫০ কোটি এবং ‘টেলিটকের থ্রি-জি নেটওয়ার্ক চালু করণ এবং ২.৫ জি শক্তিশালী করণ’ প্রকল্পে ৬৭৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

একনেকের সভায় প্রধানমন্ত্রী সরকারি মালিকানাধীন টেলিটকের সঙ্গে জয়েন্ট ভেঞ্চারের জন্য বিদেশি একটি কোম্পানি অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান মুস্তফা কামাল।