কৃষিতে বিনিয়োগের আগ্রহ আইএফসির

প্রথমবারের মত বাংলাদেশের কৃষি খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন-আইএফসি।

আবদুর রহিম হারমাছি ওয়াশিংটন ডিসি থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 April 2017, 07:34 AM
Updated : 24 April 2017, 07:53 AM

বিশ্ব ব্যাংকের এই সহযোগী প্রতিষ্ঠানটি আগামী এক বছরে বাংলাদেশে এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে, যার একটি অংশ তারা কৃষি খাতে দিতে চায় বলে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানিয়েছেন।

ওয়াশিংটন ডিসিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্ব ব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকের শেষ দিন রোববার আইএফসির নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং সিইও ফিলিপ লো হুইরোর সঙ্গে এক বৈঠকের পর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য জানান মুহিত।

তিনি বলেন, “আইএফসি বাংলাদেশে কোয়াইট অ্যাকটিভ। গত আট বছর ধরে তারা যথেস্ট ভালো করছে। আমি আইএফসির সিইওকে বলেছি, বাংলাদেশে তোমরা বিনিয়োগ বাড়াও। আগামী এক-দেড় বছরে তোমরা আমাদের ওখানে ১ বিলিয়ন ডলার নিয়োগ কর। তিনি এক বাক্যে রাজি হয়েছেন।”

অর্থমন্ত্রী বলেন, “এতোদিন আইএফসি মূলত বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ করত। যোগাযোগ খাতেও কিছু দিত। এখন তারা কৃষি, লজিস্টিকস ও আর্থিক খাতেও বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছ।”

বাংলাদেশের কৃষি খাতে আইএফসির বিনিয়োগের এই আগ্রহ এবারই প্রথম বলে অর্থমন্ত্রী জানান।

“এটা আমাদের জন্য খুবই ভালো খবর। আমাদের কৃষি খাত খুবই ভালো করছে। সে কারণেই তারা এ খাতে বিনিয়োগ করতে চাইছে। তাদের বিনিয়োগের মধ্য দিয়ে এ খাত আরও বিকশিত হবে।”

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ৪৪ বছরে বাংলাদেশের প্রধান খাদ্যশষ্য ধান চাষের জমি ১৮ শতাংশ কমে গেলেও চালের উৎপাদন বেড়েছে ৩.১৬ গুণ৷ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও)  তথ্য অনুযায়ী, সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে তৃতীয়৷

কৃষি মন্ত্রণালণয়ের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) কৃষির অবদান ১৪.৭৫ শতাংশ, যদিও এক সময় তা আরও অনেক বেশি ছিল।

ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন বেসরকারি খাতের উন্নয়নে সহযোগিতা দিয়ে থাকে। গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশে আইএফসির বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৬৩৫ মিলিয়ন ডলার।

আইএফসি বাংলাদেশে ‘টাকা বন্ড’ ছাড়তে চেয়েছিল। তার সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, “না, সেটা আর হবে না। এখন আমরা নিজেরাই আমাদের রিজর্ভের টাকা দিয়ে একটি বিনিয়োগ তহবিল গঠন করতে যাচ্ছি। সে কারণে তাদের টাকা বন্ডের আর প্রয়োজন পড়বে না।”

তবে এই তহবিল পরিচালনার ক্ষেত্রে কোনো সহায়তার প্রয়োজন হলে আইএফসি তা দিতে রাজি আছে বলে জানান মুহিত।

আইএমএফ-বিশ্ব ব্যাংকের এই বৈঠকে অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলে আছেন গভর্নর ফজলে কবির, অর্থ সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব কাজী শফিকুল আযম ও বিশ্ব ব্যাংকের বাংলাদেশের বিকল্প পরিচালক মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া।