৩ বছরে ৬ বিলিয়ন ডলার দেবে বিশ্ব ব্যাংক

আগামী তিন বছরে বাংলাদেশকে ছয় বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক।

আব্দুর রহিম হারমাছি, ওয়াশিংটন ডিসি থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 April 2017, 07:21 PM
Updated : 20 April 2017, 07:29 PM

ওয়াশিংটনে বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্ব ব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে বিশ্ব ব্যাংক সদরদপ্তরে সংস্থাটির দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যানেট ডিক্সনের সঙ্গে বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী এই ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি পাওয়ার কথা জানান।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অ্যানেট ডিক্সন আগামী তিন বছরে ২০১৭-১৮ থেকে ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রতিবছর দুই বিলিয়ন ডলার হিসাবে মোট ছয় বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

জুনেই বিশ্ব ব্যাংকের বাংলাদেশকে ঋণ সহায়তার আগের তিন বছরের প্যাকেজ শেষ হচ্ছে জানিয়ে মুহিত বলেন, ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তাদের চার বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ছিল।

“সেখানে আমরা তার চেয়ে বেশি পেয়েছি।”

আগামী জুলাই থেকে বাংলাদেশের নতুন অর্থবছর শুরু হওয়ার কথা ডিক্সনকে স্মরণ করিয়ে মুহিত বলেছেন, “আমরা বরাবরের মতো অ্যাম্বিশাস বাজেট দিতে চাই। গত আটবার আমরা ১০-১১ শতাংশ বাড়িয়ে বাজেট দিয়েছি, এবারও সেটা করব।”

এবার বাজেটে মানবসম্পদ উন্নয়নে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে বলে বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টকে জানান মুহিত।

“এর জন্য অনেকগুলো নতুন প্রকল্প নেওয়া হবে।”

চলতি অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বাজেট বরাদ্দ না কমানোর বিষয়টিও ডিক্সনকে জানিয়েছেন মুহিত।

তিনি জানান, বিশ্বব্যাপী শরণার্থীদের পুনর্বাসনে একটি ‘উইনডো’ খুলছে বিশ্ব ব্যাংক।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্ব ব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠক উদ্বোধনের সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম; ছবি-রয়টার্স

“আমরা বলেছি, মিয়ানমার থেকে আমাদের দেশে যারা এসেছে তাদের পুনর্বাসনের জন্য যেন দেওয়া হয়। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে কী পরিমাণ দেবে তা ঠিক হয়নি।”

বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে বিশ্ব ব্যাংকের যে ঋণ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেই পরিমাণ অর্থ তারা অন্য দুটি প্রকল্পে দেবে।

ওই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ায় তারা কোনো প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, “তারা তেমন কিছু বলেনি। আমরাও কিছু বলিনি।”

আগামী বাজেটে অবশ্যই একটি ব্যাংকিং কমিশন গঠন হবে বলে বিশ্ব ব্যাংকের কর্মকর্তাকে বলেছেন মুহিত।

ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা আনতে এর আগে ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে অর্থমন্ত্রী কমিশন গঠনের কথা বললেও তার বাস্তবায়ন হয়নি।

“তবে এবার অবশ্যই হবে,” বলেন তিনি।

আইএমএফ-বিশ্ব ব্যাংকের এই বৈঠকে অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলে আছেন গভর্নর ফজলে কবির, অর্থ সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব কাজী শফিকুল আজম ও বিশ্ব ব্যাংকের বাংলাদেশের বিকল্প পরিচালক মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া রয়েছেন।