বাজেটে বিমা কোম্পানির আয়কর হার ২৫ শতাংশে নামানোর দাবি

নতুন অর্থবছরের বাজেকে সামনে রেখে বিমা কোম্পানির আয়করের হার ২৫ শতাংশে নামানোসহ ছয় দফা দাবি পেশ করেছে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন-বিআইএ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 April 2017, 11:39 AM
Updated : 19 April 2017, 11:39 AM

বুধবার নয়া পল্টনে এক সংবাদ সম্মেলন করে আয়কর হার কমানোর পাশপাশি সব লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির ডিপোজিট হোল্ডারদের মুনাফার উপর ৫ শতাংশ ‘গেইন ট্যাক্স’ প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, “জীবন বিমা পলিসির ডিপোজিট হোল্ডারদের মুনাফার উপর ৫ শতাংশ গেইন ট্যাক্স প্রত্যাহার করতে হবে।”

সম্মেলনে বলা হয়, ২০১৪ সালে এক সার্কুলারে দেশের সব লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ডিপোজিট হোল্ডারদের মুনাফার উপর ৫ শতাংশ ‘গেইন ট্যাক্স’ আরোপ করার ফলে দেশের সব লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ডিপোজিট পলিসি হোল্ডারদের সংখ্যা কমে গেছে। ক্ষুদ্র পলিসি হোল্ডারদের মুনাফার উপর চালু করা ৫ শতাংশ গেইন ট্যাক্সের এ বিধান উঠিয়ে নেওয়া না হলে দেশে লাইফ ইন্সুরেন্সের ব্যবসা ২০১৪ সালের মত প্রতিনিয়ত কমতে থাকবে এবং কোম্পানিগুলোর পক্ষে টিকে থাকা কষ্টসাধ্য হবে।

পাশাপাশি দেশে ক্ষুদ্র পলিসি হোল্ডাররা সামাজিক সেবা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হবে দাবি করে এই ৫ শতাংশ গেইন ট্যাক্স প্রত্যাহারের প্রস্তাব করে বিআইএ।

বিমা কোম্পানির আয়করের হার ২৫ শতাংশ করার দাবি জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, “বর্তমানে সাধারণ বিমা ও জীবন বিমা কোম্পানির জন্য কর্পোরেট ট্যাক্স রেইট ৪০ শতাংশ।

“ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ সামগ্রিক অর্থনৈতিক কারণে প্রচুর আয় করে থাকে। বিমা কোম্পানির পক্ষে অত্যাধিক আয় করা দুরূহ। দেশের অর্থনৈতিক অবদানে বিমার ভুমিকা যথেষ্ট কিন্তু বিভিন্ন কারণে বিমা কোম্পানিগুলোর আর্থিক অবস্থা খুবই নাজুক; সুতরাং বিমা কোম্পানির আয়ের উপরে ৪০ শতাংশ হারে কর নির্ধারণের কোনো যুক্তিকতা নেই।”

বিমা এজেন্ট কমিশনের বিপরীতে উৎসে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর কর্তন বন্ধ করারও দাবি ইন্সুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিমা এজেন্ট কমিশনের বিপরীতে ১৫ শতাংশ উৎসে কর কেটে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে তা জমা করে সংশ্লিষ্ট মূল্য সংযোজন কর কার্যালয়ে জমা করতে নির্দেশনা দিয়েছে।

ইন্সুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বলছেন, এ বিধানের ফলে ইন্স্যুরেন্স এজেন্টদের পাশাপাশি দেশের বিমা শিল্পের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে। এজেন্টরা কোম্পানির কাছ থেকে যে কমিশন পায়, যা তার আয় এবং এই আয়ের উপর ৫ শতাংশ হারে আয়কর দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে তার এই আয়ের উপর যদি আবার ১৫ শতাংশ মূসক দিতে হয় তাহলে দ্বৈত কর ধার্য্য করা হবে, যা কাম্য নয়।

এছাড়া বিমা শিল্পে কর্মরত স্বল্প আয়ের এজেন্টদের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের মতো ন্যূনতম করমুক্ত আয় সীমা পর্যন্ত উৎসে কর কর্তন থেকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রস্তাব করছে তারা।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আয়কর আইনের সেকশন ৫৩জি অনুযায়ী বিমা শিল্পে কর্মরত এজেন্টদের ক্ষেত্রে প্রাপ্য কমিশনের পরিমাণ নির্বিশেষে ৫ শতাংশ হারে উৎসে কর কর্তন করার বিধান রয়েছে।

অন্যদিকে বিদ্যমান আয়কর আইন অনুযায়ী ব্যক্তি করদাতাদের ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়ের সীমা দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ প্রেক্ষাপটে বিমা শিল্পে কর্মরত স্বল্প আয়ের এজেন্টদের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের মতো ন্যূনতম করমুক্ত আয় সীমা পর্যন্ত উৎসে কর কর্তন থেকে অব্যাহতির দাবি তাদের।

এ ছাড়া করমুক্ত ডিভিডেন্ট আয়ের সীমা এক লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেছে তারা।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ কবির হোসেন এবং সহ-সভাপতি আহসানুল ইসলামসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলন।