লেনদেন ভারসাম্যে বিলিয়ন ডলারের ঘাটতি

আমদানি ব্যয় বাড়তে থাকায় বাংলাদেশের বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাব ভারসাম্যে ঘাটতি বেড়েছে।

আবদুর রহিম হারমাছিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 April 2017, 02:43 PM
Updated : 5 April 2017, 02:43 PM

বাংলাদেশ ব্যাংক বুধবার ‘ব্যালেন্স অব পেমেন্ট’ এর হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে চলতি অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে ১১১ কোটি ৮০ লাখ ডলারের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

অথচ গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের একই সময়ে ২৯০ কোটি ৮০ লাখ ডলারের উদ্বৃত্ত ছিল।

অর্থনীতির গবেষক জায়েদ বখত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বেশ কিছু দিন বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কম থাকায় আমদানি খরচ কম হচ্ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তেলের দাম বাড়ায় পরিস্থিতি বদলেছে।

তাছাড়া পদ্মা সেতুসহ বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্পের কাজ চলায় প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আমদানি করতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে শিল্পের জন‌্য প্রয়োজনীয় মূলধনী যস্ত্রপাতির আমদানি। খাদ্যপণ্য (চাল ও গম) আমদানিতেও খরচ বাড়ছে।

 

“তবে এতে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। ক্যাপিটাল মেশিনারি ও কাঁচামাল আমদানি বাড়া মানে দেশে বিনিয়োগ বাড়া। অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার হওয়া। সেটাই হচ্ছে,” বলেন বিআইডিএস এর এই গবেষক।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে ৩২ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন (রিজার্ভ) রয়েছে। এখন আমদানি ব্যয় বাড়ায় তেমন সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

নিয়মিত আমদানি-রপ্তানিসহ অন্যান্য আয়-ব্যয় চলতি হিসাবের অন্তর্ভুক্ত। এই হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হল, নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোনো ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতবছর জুনে ৩৭০ কোটি ৬০ লাখ ডলারের বড় উদ্বৃত্ত নিয়ে ২০১৫-১৬ অর্থবছর শেষ করেছিল বাংলাদেশ। সে সময় বিশ্ববাজারে প্রতি ব্যারেল (প্রায় ১৫৯ লিটার) অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ছিল ৩৫ ডলারের মত। আর এখন তা ৫৫ থেকে ৬০ ডলারে ওঠানামা করছে।

আমদানি খাতে খরচ বাড়ায় জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে পণ্য বাণিজ্যে সামগ্রিক ঘাটতি ৬০৮ কোটি ৯০ লাখ ডলার ছাড়িয়েছে।

গত অর্থবছরের একই সময়ে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৪১৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার।

এই আট মাসে আমদানি খাতে খরচ বেড়েছে ১০.১৫ শতাংশ। আর রপ্তানি আয় বেড়েছে ৩.৩১ শতাংশ।