নয় মাসে রেমিটেন্স কমেছে ১৭ শতাংশ

গত মার্চে আগের মাসের তুলনায় বেশি রেমিটেন্স দেশে এলেও অর্থবছরের নয় মাসের হিসাবে এর পরিমাণ কমেছে ১৭ শতাংশ।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 April 2017, 04:09 PM
Updated : 4 April 2017, 05:04 AM

রেমিটেন্সের অধঃগতিতে উদ্বিগ্ন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এই প্রবণতাকে দেশের অর্থনীতির জন্য ‘অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ’ বলে মনে করছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক সোমবার হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, প্রবাসীরা মার্চে ১০৭ কোটি ৭৪ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন।

তার আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে মাত্র ৯৪ কোটি ডলারের রেমিটেন্স দেশে এসেছিল, যা ছিল একক মাসের হিসাবে গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম।

আর চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা মোট ৯১৯ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন।

গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের একই সময়ে দেশে এসেছিল ১ হাজার ১০৫ কোটি ডলার। সে হিসাবে এই নয় মাসে প্রবাসী আয় কমেছে ১৭ শতাংশ।

গত বছরের মার্চ মাসে ১২৮ কোটি ৫৬ লাখ ডলারের রেমিটেন্স দেশে এসেছিল। সে হিসাবে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মার্চে রেমিটেন্স কমেছে ১৬ দশমিক ১৯ শতাংশ।

অর্থমন্ত্রী মুহিত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বাংলাদেশের প্রবাসী আয়ের একটি বড় অংশ আসে মধ্যপ্রাচ্য থেকে। সেসব দেশের অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়েছে। তেলের দামও সেভাবে বাড়েনি, ফলে তাদের বাজেট ঘাটতি রয়েছে।

“এ কারণে সেখানে কর্মরত শ্রমিকদের আয় কমে গেছে। অনেকের বেতনও কমে গেছে; চাকরি হারিয়েছে কেউ কেউ। এ কারণে আমাদের প্রবাসী আয় কমে গেছে।”

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণা পরিচালক জায়েদ বখত বলেন, ডলারের বিপরীতে ব্রিটিশ পাউন্ড, ইউরো, মালয়েশিয়ান রিংগিত ও সিঙ্গাপুরি ডলারের মূল্যমান সাম্প্রতিক সময়ে কমে গেছে। ফলে এসব দেশের শ্রমিকদের আয়ের বিপরীতে বাংলাদেশে ডলার কম পাওয়া যাচ্ছে।

রেমিটেন্স প্রবাহ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারাও উদ্বিগ্ন। সম্প্রতি তারা এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছেন। পরিস্থিতি বুঝতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি প্রতিনিধিদল সম্প্রতি সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার ঘুরে এসেছেন।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত কয়েক বছর ধরে প্রবাসী আয় মাসে ১০০ কোটি ডলারের বেশি থাকলেও গত নভেম্বর ও ডিসেম্বরে তা নেমে আসে যথাক্রমে ৯৫ কোটি ১৩ লাখ ডলার ও ৯৫ কোটি ৮৭ লাখ ডলারে। এরপর জানুয়ারিতে ১০১ কোটি ডলার দেশে আসে।

প্রবাসী আয়ের নেতিবাচক প্রবণতা প্রথম দেখা দেয় ২০১৩ সালে। ওই বছরে প্রবাসীরা ১ হাজার ৩৮৩ কোটি ডলার পাঠান, যা ২০১২ সালের তুলনায় ২ দশমিক ৩৯ শতাংশ কম ছিল।

এরপর ২০১৪ সালে প্রবাসী আয়ে ৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ এবং ২০১৫ সালে ২ দশমিক ৬৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়। কিন্তু ২০১৬ সালে তা আবার ১১ দশমিক ১৬ শতাংশ কমে যায়।