শিক্ষার্থীদের বেতন ৫ গুণ বাড়বে: অর্থমন্ত্রী

সরকারি মেডিকেল কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বেতন পাঁচ গুণ বাড়াতে চান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 March 2017, 01:39 PM
Updated : 30 March 2017, 08:33 PM

আগামী অর্থবছরের বাজেট নিয়ে বৃহস্পতিবার এনজিও প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় তিনি নিজের এই চাওয়ার কথা জানান।

অর্থমন্ত্রী বলেন, “বর্তমানে পোস্ট মাধ্যমিক সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেতন অনেক কম।

“যেসব সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন ও টিউশন ফি ১২ থেকে ২০ টাকার মধ্যে, তা বাড়িয়ে আগামী বাজেটে ৫ গুণ করা হবে।”

বেসরকারি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খরচের সঙ্গে তুলনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

‘বিড়ির অস্তিত্ব থাকবে না’

এই প্রাক-বাজেট আলোচনায় বাংলাদেশ থেকে বিড়ি বিলুপ্তির আকাঙক্ষার কথাও জানান অর্থমন্ত্রী মুহিত।   

তিনি বলেন, “আমি চাই আগামী দুই বছরের মধ্যে দেশে বিড়ি থাকবে না। কিন্তু পারব কি না, জানি না ডাউট আছে।”

কেন বিড়ি শিল্পের বিলুপ্তি চান- তার ব্যাখ্যায় মুহিত বলেন, “এখন বিড়ি ইজ অ্যা ডেড ইন্ডাস্ট্রি এবং এটা ফাঁকিবাজি ইন্ডাস্ট্রি। এখন যারা সিগারেট প্রডিউস করে, তারা বিড়ি প্রডিউস করে। দে চিট দি গভর্নমেন্ট।

“বিড়িতে অতিরিক্ত স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। তাই জনস্বাস্থ্যের দৃষ্টিকোণ থেকে বিড়ি দেশ থেকে বিতাড়িত হওয়া উচিৎ।”

অধূমপায়ী মুহিতের বিড়ির ক্ষেত্রে নিজের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যদেরও অন্তরায় হিসেবে দেখছেন।  

“প্রেসার গ্রুপ রয়েছে। যেমন এমপিদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি বিড়ি সাপোর্ট করে। কী কারণে করে আই ডোন্ট নো।”

শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এই প্রাক-বাজেট আলোচনা হয়।

আলোচনায় এনজিও প্রতিনিধিরা বাজেট সামনে রেখে তাদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া ও পরামর্শ অর্থমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন।

আগামী বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানি, স্যানিটেশন, পরিবেশ, অবহেলতি জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী ইত্যাদি খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি করেন তারা।

গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, “বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে শিক্ষা খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। আগামী বাজেটে তা জাতীয় আয়ের ৬ শতাংশ অথবা জাতীয় বাজেটের ২০ শতাংশ শিক্ষা খাতে ব্যয় করা এখন সময়ের দাবি।

“সরকারের রূপকল্প ২০২১ ও জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ এর বাস্তবায়নের বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে একটি রোডম্যাপ প্রণয়ন করতে হবে।”

তিনি বলেন, “আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষাখাতের জন্য ১৮ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়ার প্রস্তাব করছি। পরবর্তী বাজেটে পর্যায়ক্রমে ১ থেকে ২ শতাংশ করে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করতে হবে।”

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সমন্বয়ক ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বেতন ও আবাসিক হলের চার্জও অনেক কম। অথচ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি অনেক বেশি।

“তাই যৌক্তিকভাবে সরকারি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন বাড়ানো উচিত।”

জাফরুল্লাহ বলেন, “দেশে স্বাস্থ্য খাতে আইসিইউ’ র নামে যে বাণিজ্য চলছে, তা বন্ধ হওয়া উচিত। দেশের বেসরকারি হাসপাতালগুলোর আইসিইউ’র ভাড়া ফাইভ স্টার হোটেলের চেয়েও বেশি।”

ইন্টার্ণ চিকিৎসকদের এক বছর ইউনিয়ন হেলথ সেন্টারে সেবাদান বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করেন তিনি।

‘পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন’র আহ্বায়ক আবু নাসের খান প্রকল্প ভিত্তিক বাজেট বরাদ্দের পরিবর্তে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের জন্য রোডম্যাপ তৈরি করে অর্থ বরাদ্দের পরামর্শ দেন। জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় বেভারেজ ও ফাস্টফুডের ওপর অধিক হারে কর আরোপের দাবিও জানান তিনি।